ক্যালিফোর্নিয়া: ‘যেন কারফিউ! আতঙ্কে কাটলেও অন-লাইনে চলছে সবই’,

0
664

SANTA MONICA, CALIFORNIA – (Photo by David McNew/Getty Images)

সারা পৃথিবী যেন এক লহমায় থমকে গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফর্নিয়া। বাঙালিদের সংখ্যা  কম নয় এই এরিয়াতে।নিয়মমাফিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত এখানকার নাগরিকরা। আর এখন, করোনা ভাইরাস দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ভয়ঙ্কর ভাবে থাবা বসিয়েছে । স্কুল, কলেজ, লাইব্রেরি , অফিস, ইউনিভার্সিটি সব বন্ধ এপ্রিলের শেষ অবধি। সরকারি নির্দেশে খোলা রাখা হয়েছে শুধু সুপারমার্কেট, মেডিকেল শপ, গ্যাস স্টেশন আর ব্যাঙ্ক। এখানে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার, পুরো এডুকেশন সিস্টেম তাই এখন অনলাইন করে ফেলা হয়েছে। বাচ্চাদের স্কুল থেকে ক্লাসওয়ার্ক এবং হোমওয়ার্ক পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে ই–মেলের মাধ্যমে আর বড়দের ক্লাস চলছে স্কাইপে বা অন্যান্য অনলাইন মাধ্যমে। তথ্য প্রযুক্তির কর্মচারীরা ওয়ার্ক ফ্রম হোম নিয়ে বসে আছেন বাড়িতে। এপ্রিল মাসে বে এরিয়াতে বেশ কিছু অনুষ্ঠান হবার কথা ছিল, বসন্ত উৎসব, বাংলা নাট্য উৎসব, যার প্রস্তুতিও বেশ কিছুদিন ধরে চলছে, এখন সবকিছুই বাতিল করা হয়েছে।

সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হল, পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত দেশ হওয়া সত্ত্বেও আজ মানুষ এতটাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে যে সবাই সুপারমার্কেট থেকে নিজেদের প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি সামগ্রী কিনে ফেলেছেন বা কিনতে চাইছেন। সুপারমার্কেটে দুধ, ডিম্, মাছ , মাংস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার , টিসু পেপার , কিচ্ছু পাওয়া যাচ্ছে না। কম পক্ষে বিশ পঁচিশটি স্বদেশী স্টোর এখানে আছে।

এই সংক্রমণটি বয়স্ক মানুষদের ওপর বেশি প্রভাব ফেলছে , তাই তাঁদেরকে সুস্থ রাখাটা অনেক বেশি প্রয়োজন। এখানে বেশ কিছু বাঙালিরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে এই শ্রেণীর মানুষদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার। সেই সব বয়স্ক মানুষ যারা বাড়ির বাইরে বেরনোর মতো ক্ষমতা রাখেন না, তাঁদের বাজার করা থেকে ওষুধ এনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।

এখনো অব্দি COVID-19 আক্রান্তের সংখ্যাটা ক্যালিফোর্নিয়াতে ৫৯৬। সকলে গৃহবন্দী। ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরের নির্দেশে এখন শেল্টার ইন প্লেস আইনের অন্তর্ভুক্ত। এর মানে প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বেরোতে পারবো না। রাস্তায় রাস্তায় পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ১০ জনের বেশি জমায়েত করতে দেওয়া হচ্ছে না, তাই সুপারমার্কেট, ব্যাঙ্ক, ইত্যাদি জায়গায় সর্বদা পুলিশের নজর রয়েছে। বস্তুত, প্রায় কারফিউর মতো অবস্থা এখন। মানুষ যেহেতু এখানে অনেক বেশি সচেতন এবং সাবধানী, তাই নিজের সুরক্ষার সাথে সাথে সমাজের সুরক্ষার কোথাও ভাবছে। এটাই এখন ভরসা। সকলে আশাবাদী এই অচলাবস্থা দ্রুত কেটে যাবে, আর আবারও আগের মতন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।