অবশেষে ঐতিহাসিক স্থাপনা ‘আয়া সোফিয়া’ হচ্ছে মসজিদ!

0
844

আয়া সোফিয়া। বা হাজিয়া সোফিয়া। রাজধানী ইস্তাম্বুলে অবস্থিত ঐতিহাসিক স্থাপত্য নির্দশন। কখনও গির্জা আবার কখনও মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। তুরস্কের ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন ইস্তাম্বুলের আয়া সোফিয়া জাদুঘর এখন আলোচনার তুঙ্গে। বর্তমানে এটি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে শোনা যাচ্ছে এটিকে মসজিদে পরিণত করার পরিকল্পনা করছে তুরস্ক।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোয়ান প্রাচীন এই স্থাপনাটিকে মসজিদে রূপান্তরের আগ্রহের কথা ঘোষণা করেন। এরপরে থেকেই এই আলোচনার সূত্রপাত।

অর্থোডক্স গির্জার জন্য সর্বপ্রথম তুরস্কের ইস্তাম্বুলে স্থাপিত হয় এ স্থাপনাটি । ১২০৪ সাল পর্যন্ত এ স্থাপনাটি গির্জা হিসেবে উপাসনা চলে। ১২০৪ সালের পর এটি ক্যাথলিক গির্জায় রূপান্তরিত হয়। যা প্রায় ৫৭ বছর ক্যাথলিক গির্জা হিসেবে ব্যবহারের পর ১৯৬১ সালে তা আবার অর্থোডক্স গির্জায় রূপান্তরিত হয়। আর তা ১৪৫৩ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৯২ বছর স্থায়ী হয়।

১৪৫৩ সালে (পঞ্চদশ শতাব্দির মাঝামাঝি সময়ে) এ অঞ্চলটি উসমানিয় খলিফাদের দখলে আসে। উসমানিয় শাসকরা এ স্থাপনাটিকে মসজিদে পরিণত করে। যা ৫০০ বছর স্থায়ী হয়। সে সময় এ স্থাপনাটিকে ‘ইম্পেরিয়াল মসজিদ’ নামে ঘোষণা দিয়ে প্রধান মসজিদের মর্যাদা দেয়া হয়। ৪৮২ বছর মসজিদ থাকার পর ১৯৩৫ সালে কামাল আতাতুর্ক এ স্থাপনাটিকে জাদুঘরে পরিণত করেন।

এক পর্যায়ে স্থাপনাটি নিয়ে খ্রিস্টান ও মুসলমানদের দ্বন্দ্বের কারণে নতুন নিয়ম চালু হয়। আর তাহলো- এ স্থাপনার মূল হলরুমটি ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। সেটি মুসলিম কিংবা খ্রিস্টান কেউই ব্যবহার করতে পারবে না। তবে উভয় ধর্মের অনুসারিদের জন্য এ স্থাপনায়ই রয়েছে আলাদা আলাদা স্থান। আবার জাদুঘরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আলাদা আলাদা ইবাদতের স্থানও নির্মাণ করা হয়।

২০১৯ সালের মার্চে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, পর্যটকরা হাজিয়া সোফিয়ার ব্লু মসজিদে আসা যাওয়া করতে পারবেন। এজন্য তাদের হাজিয়া সোফিয়া জাদুঘরের সমপরিমাণ অর্থ দিয়ে মসজিদটি পরিদর্শন করতে হবে বলে জানান। পাশাপাশি এটি মসজিদে পরিণত করতে আলোচনা প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন।আয়া সোফিয়াকে ঘিরে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তুরস্কের বাইরে সমালোচিত হচ্ছেন। তবে এই সমালোচনাকে পাত্তা না দিয়ে উল্টো বহির্বিশ্বকে এ বিষয়ে নাক গলাতে নিষেধ করেছেন মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী এই নেতা।

তিনি আরও বলেছেন, আমাদের মসজিদ নিয়ে বহির্বিশ্বের কেউ গলাবাজি করলে আমরা সেটিকে তুরস্কের সার্বভৌমত্বের ওপর হামলা মনে করবো। সম্প্রতি ইস্তাম্বুলের লেভান্ট অঞ্চলে একটি নতুন মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি এ সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন।