বসনিয়ার সেব্রেনিৎসা মুসলিম গণহত্যার ২৫তম বার্ষিকী পালিত

0
690

বসনিয়ার সেব্রেনিৎসা মুসলিম গণহত্যার ২৫তম বার্ষিকী পালিত

বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সেব্রেনিৎসায় সার্ব বাহিনীর চালানো ভয়াবহ গণহত্যার ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। শনিবার ১১ জুলাই শোক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দুঃসহ সে ঘটনাকে স্মরণ করছে বসনীয়রা। এক বিবৃতিতে সেব্রেনিৎসা গণহত্যার বার্ষিকীকে ‘যন্ত্রণাদায়ক স্মৃতি’ বলে উল্লেখ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে বলকান উপদ্বীপে অবস্থিত বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা । একসময় এটি যুগোস্লাভিয়া প্রজাতন্ত্রের একটি অংশ ছিল। ১৯৯২ সালের মার্চ স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে তারা। এর পরপরই বসনীয় মুসলমান, ক্রোয়েশীয় ও সার্বীয় জাতির লোকদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। যুগোস্লাভিয়া ভেঙে যাওয়ার পর সার্বরা ১৯৯৫ সালের ১১ জুলাই সেব্রেনিৎসা শহরটি দখল করে নেয়। জাতিসংঘের ৮১৯ নম্বর প্রস্তাব অনুযায়ী সেব্রেনিৎসা শহরটি নিরাপদ অঞ্চল বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। এলাকাটি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী দ্বারা সুরক্ষিত ছিল। তা সত্ত্বেও বসনিয়ান সার্ব বাহিনী এলাকাটি দখল করে।

সেব্রেনিৎসা দখলের প্রথমদিন থেকেই সার্বীয় বাহিনী স্থানীয় বসনীয় জনগোষ্ঠীর সকল পুরুষকে আলাদা করে নেয়। পরে তাদেরকে গণহারে হত্যা করে। ১১ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন সেব্রেনিৎসার কোথাও না কোথাও এই গণহারে হত্যার ঘটনা ঘটেতে থাকে।হত্যার শিকার ব্যক্তিদেরকে মৃত্যুর আগে নিজেদের কবর খনন করতে সার্বীয় বাহিনী বাধ্য করে। সার্ব বাহিনী সেখানে জাতিসংঘের ডাচ শান্তিরক্ষীদের সামনেই ৮ হাজার ৩৭২ জন বসনীয় মুসলমানকে হত্যা করে মাটিচাপা দেয়। সে গণহত্যার ২৫ বছর পর এখনও সেখানে শনাক্ত হয় গণকবর, মেলে গণহত্যার শিকার মানুষদের দেহাবশেষ।

১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বসনিয়ায় সার্ব বাহিনীর হামলায় দুই লাখের বেশি বসনীয় নিহত ও প্রায় বিশ লাখ শরণার্থী হয়। তবে সেব্রেনিৎসার গণহত্যাকেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে নৃশংস ও ভয়াবহ গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে। সার্বিয়া এ ঘটনার জন্য ক্ষমা চাইলেও একে গণহত্যা বলে উল্লেখ করতে নারাজ তারা।