চাকুরিতে সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টি নির্ভর করে লক্ষ্য এবং পরিকল্পনার উপর

0
257

চাকুরিতে সন্তুষ্টি নির্ভর করে সঠিক লক্ষ্য এবং পরিকল্পনার উপর-

প্রফেসর সরওয়ার জাহান
বেঁচে থাকার তাগিদেই মূলত মানুষ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থাকে। দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোতে কর্মরত অনেকেই তাঁদের চাকরি বিবিধ কারনে সন্তুষ্ট নয় । আর এই অসন্তোষের পেছনে প্রতিষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী কাজের পরিধি, প্রত্যাশিত বেতন-ভাতা, সুযোগ-সুবিধার, কর্মপরিবেশকে দায়ী করছেন বিভিন্ন পেশায় চাকুরীরত কর্মীরা।
দেশে ১৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সের জনগোষ্ঠী অর্থনৈতিকভাবে সক্রিয় , তারা মোট জনগোষ্ঠীর শতকরা ৬৮ ভাগ ৷বাংলাদেশে প্রতিবছর নতুন করে ২২ লাখ কর্মক্ষম লোক চাকরি বাজারে প্রবেশ করে৷ কিন্তু কাজ পায় মাত্র সাত লাখ কর্মক্ষম মানুষ৷ কর্মক্ষম মানুষ যদি লক্ষ্য এবং সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে কর্মক্ষেত্রে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা  আরো বাড়ানো সম্ভব বলেও মনে করেন মানব সম্পদ উন্নয়ন গবেষকরা।
কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের অসন্তুষ্টির অন্যতম কারন কর্মজীবী মানুষ এবং প্রতিস্ঠানগুলিতে পেশাদারিত্ব গড়ে না উঠা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট কর্মজীবী প্রায় ৫ কোটি ৬৮ লাখ। এর মধ্যে সরকারি কর্মজীবীর সংখ্যা প্রায় ২১লাখ ও বেসরকারি খাতে রয়েছেন প্রায় ৫ কোটি ২০লাখ মানুষ। এই জনসংখ্যার কত জন সন্তুষ্টি নিয়ে বা খুশি মনে চাকুরী করেন তা হয়তো জানা যাবেনা। তবে সন্তুষ্টি নিয়ে কিভাবে চাকুরিতে মনোনিবেষ করা যায় তা জানা দরকার।
জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য যদি সঠিক ভাবে নির্ধারন করা না হয়। চলার পথে অনেক সময়েই হোঁচট খেতে হবে অথবা কাজের প্রতি আগ্রহ থাকবেনা। এই অসন্তুষ্টি থেকে শুরু হয় কাজের প্রতি অনিহা। আর অনিহা থেকেই নেতিবাচক আচরনও অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়। আবার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে সম্পর্কের টানা পোড়েন থাকলেতো কথাই নেই। অনিহার কারনে একটা সময় নিজেকে ব্যর্থ মনে হবে। অন্যের প্রতি দোষ পড়বে। সবচেয়ে বড় কথা শরীর মন ধীরে ধীরে অবনতির দিকে যাবে। নেতিবাচক কাজের দিকে  বা নেতিবাচক আচরণ প্রভাব বিস্তার করবে ।

কাজে সন্তুষ্টি এক এক জনের দৃষ্টিভঙ্গি বা ব্যক্তিগত চাহিদার উপর নির্ভর করে।কাজের সন্তুষ্টির জন্য কিছু গুরুত্ব পূর্ণ দিক রয়েছে। যেমন, কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে কাজের সন্তুষ্টি নির্ভর করে কাজের পরিবেশ-পরিস্থিতির প্রতি আবেগময় প্রতিক্রিয়া। অনেকের ক্ষেত্রে কাজের সন্তুষ্টি মাপা হয় কাজের ফলাফল কতটা ভাল-মন্দ তার উপর। পারিশ্রমিক এবং বিভিন্ন পুরষ্কারের ব্যবস্থা কাজের সন্তুষ্টির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রাখে। অধিকাংশ কর্মীরা প্রায়শই জানেনা বা উপলব্ধি করতে পারে না তার চাওয়া এবং প্রয়োজন কি ? অনেকে পদবী এবং যোগ্যতার ভারসাম্য বুঝতে অক্ষম । বিবেচনায় আনে কেবল প্রতিষ্ঠানের সুযোগ সুবিধা ও বেতন-স্তরের বিষয়টি এবং কতৃপক্ষ কীভাবে তাদের অবদানকে মূল্যায়ন করে তার উপর।

 প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের তার নিজস্ব পদোন্নতির ব্যবস্থা থাকে যা কাজের সন্তুষ্টিতে বিভিন্নভাবে প্রভাব ফেলে। যেমন, কেউ জ্যেষ্ঠতার জন্য পদোন্নতি পেয়ে কাজের সন্তুষ্টি উপভোগ করেন, কিন্তু তারা প্রাপ্ত ফলাফলের জন্য পদোন্নতি প্রাপ্ত কর্মচারীদের মতো ততটা সন্তুষ্ট হন না। আাবার কেউ কাজের মূল্যায়নের উপর পদোন্নতি পান । এই পদোন্নতি কাজের সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টিতে বেশ ভাল ভাবে প্রভাব বিস্তার করে । আমাদের দেশে কর্মীরদের একটা ধারনা, প্রতি বৎসরেই বেতন বৃদ্ধি বা পদোন্নতি একটি অধিকার মনে করে। অথচ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব নিয়ম এবং এর সাথে কেবল জ্যেষ্ঠতা নয় আর্থিক সর্ম্পক, কর্মদক্ষতা কাজের প্রতি আন্তরিকতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত যা কর্মীরা বুঝতে চায়না।

কর্মী এবং কর্তৃপক্ষ পরষ্পরের প্রতিদৃষ্টিভঙ্গি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে যাঁরা থাকেন তাঁদের ভূমিকা অনেক বেশী যা কর্মীকে চাকুরীতে সন্তুষ্টিতে প্রভাবিত করে। এইখানেই কর্মীরা নিখুঁত ভাবে সন্তুষ্ট-অসন্তুষ্ট হন। তবে সুশিক্ষার অভাবে কর্তৃপক্ষ-প্রতিষ্ঠান যত ভালই হউক না কেন পরিবার, সামাজিক অবকাঠামো, পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং অসুস্থ প্রতিযোগিতা চাকুরীতে সন্তুষ্ট-অসন্তুষ্ট বড় ভুমিকা রাখে । প্রতিষ্ঠানের সফলতায় উচ্চপদস্থদের আন্তরিকতায় কর্মীরা খুশি থাকে । যদিও কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেতে দীর্ঘসময় প্রয়োজন হয়। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান স্বল্পসময়েই সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়। যেকোন  প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠার পিছনে কর্মীদের ভূমিকা অনন্য। এরজন্য যোগ্য নেতৃত্ব, সঠিক সমন্বয়, অবিচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, সুস্পষ্ট লক্ষ্য, সৃজনশীলতা, আর্থিক স্বচ্ছলতা, যোগ্য কর্মী বাহিনী অপরিহার্য্য । একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে মানুষ , আর সেই প্রতিষ্ঠানের সাফল্যও এনে দেয় মানুষ, এক্ষেত্রে স্ব স্ব দায়িত্ব-কর্তব্যের প্রতি সচেতন হয়ে সন্তুষ্টিচিত্তে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রতিষ্ঠানের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিদের সাথে সুসর্ম্পক একান্ত প্রয়োজন । তা নাহলে ভুল ধারনা সৃষ্টি হবে এবং জম্ম নিবে কাজের প্রতি অসন্তুষ্টির ।

বাহ্যিক দিকদিয়ে বিবেচনা করলে অনেক সময় মনে হয়, কর্মীরা প্রতিষ্ঠানের জন্য ভালো কাজ করে । এধরনের ধারনা ভুল । কারণ একজন ভাল কর্মী কখনোই শুধু প্রতিষ্ঠানের বা উচ্চপদস্থদের প্রতি জন্য সেরা কাজটি করে না । ভালো কাজ করার পেছনে তার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য বা পারিশ্রমিক বড় ভূমিকা রাখে। সেই লক্ষ্য বা স্বপ্ন কিংবা তার বর্তমান কে ঘিরে সৃষ্টি হয় চাহিদা ।

প্রতিষ্ঠানের একজন ভালো কর্মী, যিনি নিরবচ্ছিন্ন ভাবে এক বছর অবধি সেরা কাজ করে । কর্তৃপক্ষ হঠাৎ দেখে তিনি আগের মতো মানসম্পন্ন কাজ করছেন না । এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো কাজের প্রতি তার অনিহা বা অসন্তুষ্টি, তা যে কোন কারনেই হউক না কেন। কর্মী আর আগের মত নাই ।  একজন কর্মী যদি তার লক্ষ্য পূরণে তার স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি চাহিদার পূরণ না করতে পারে সে কাজের ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হবেই । এই লক্ষ্য বা স্বপ্ন যে ধরনেরই হউক না কেন । সে অসন্তুষ্টি শুধু অর্থেই সীমাবদ্ধ নয়, এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে কর্মক্ষেত্র,ব্যক্তিগত, পারিবারিক,  প্রভৃতি বিষয়।  প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে যারা কাজ করে, তাদের ভালো রাখা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের ইতি বাচক মনোভাব, সদিচ্ছা জরুরি। প্রতিষ্ঠান বলতে শুধু কোনো বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠানই নয়, হতে পারে তা যে কোন ছোট অফিস। কর্তৃপক্ষ যদি কর্মীদের এ অসন্তুষ্টির বিষয় গুলো জেনে তা সমাধান করেন, তাহলে দুর্ঘটনা ছাড়াই সেই প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। নিয়োগ কর্তাকে বিবেচনায় নিতে হবে কর্মীদের চাহিদা কী এবং তা কতটুকু ন্যায্য তাঁর প্রতিষ্ঠানের জন্য । তাযখন একটি সন্তোষ জনক পর্যায়ে থাকবে, তখনই প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা সন্তুষ্টি থাকবে। যদি বেতন বা সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে প্রশ্ন আসে, কর্মীকে জানানো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা বা কর্মীর যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বেতন সুযোগ-সুবিধা হয় । উচ্চবিলাসী বা অলসরাই কেবল  ভুল বুঝবে অন্যরা নয়  । ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আর কর্মীদের মাঝে কোন দুরত্ব সৃষ্টি  হওয়া উচিৎ নয়। এই দুরত্বও অনেক সময় কাজে অসন্তোষের কারন হয়ে থাকে ।  কর্মীদেরও মনে রাখতে হবে চাকুরীতে গতকালের কোন স্থান নেই। সর্বদা আজ এবং আগামী । কোন কিছুই সহজে নিতে নেই । কর্মীদের কর্মদক্ষতা আন্তরিকতার উপরই র্নিভর করে প্রতিষ্ঠানের সফলতা যা থেকে ব্যায় হয় কর্মীদের জন্য ।কর্মীকে অবশ্যই বুঝতে হবে তার চাহিদা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের দেওয়ার ক্ষমতা কতটুকু আছে ? বা তা বাস্তবায়নে কতটুকু আন্তরিক । কর্মী কতটুকু কর্মদক্ষতা সমপন্ন। তাঁরপদে তারমতন লোকের চাহিদা কেমন আছে ! তা জেনেই প্রতিষ্ঠানে কাজ করা উচিৎ। কষ্ট পাওয়ার চেয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ । ক্যারিয়ার পরিকল্পনায় প্রতিষ্ঠান কি চায়, প্রতিষ্ঠানের আয়ের স্তর, কাজের স্থিতিশীলতা এবং অগ্রগতির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া সর্ম্পকে ধারনা নিয়েই চাকুরী করা উচিৎ। কর্মী যদি মনে করে কর্মক্ষেত্রে তার কোন গুরুত্ব নাই বা সে জৈষ্ঠতার কারনে একটু হালকা সময় দিতেই পারে । বা কাজে আগের মত পরিবেশ নাই । সে ক্ষেত্রে মন খারাপ না করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করা উচিৎ। ফলপ্রসু আলাপ যদি না হয় নতুন কর্মক্ষেত্র খোঁজা, যেখানে খুশিমনে কাজ করা যাবে। অখবা নিজেকে খাপ খেয়ে চলতে হবে । কারন মনের সাথে স্বাস্থ্য, পরিবার জড়িত।
চাকরিতে সন্তুষ্টি না খাকলে স্বাস্থ্যের উপর এর প্রভাব পড়ে, মানসিক সমস্যাও হতেপারে, এই সতর্ক বার্তা চিকিৎসাবিদ বা গবেষকরা দিয়েই যাচ্ছেন। একজন মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য অনেকটাই নির্ভর করে নিজের চাকরির প্রতি তার অনুভূতি কেমন তার উপর। কর্ম জীবনের চাকরি নিয়ে যাদের সন্তুষ্টি কম, তারা হতাশা এবং দুশ্চিন্তায় ভোগেন বেশি। এতে মন ভাল থাকেনা। ফলে বিবিধ শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। চাকরি নিয়ে অসন্তুষ্ট ব্যক্তিদের মানসিক সমস্যায় অস্বস্তি আর হতাশা থেকে উচ্চ রক্তচাপ পরে হৃদরোগ ডায়েবিটিস সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত জটিলতার কারণ হতে পারে, যা বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে জটিলতায় রুপ নেয়।সন্তুষ্টি ছাড়া দায়িত্ব পালন করা যায়না। তাহলে ভাবতে হবে বাস্তবতার আলোকে কিসে সন্তুষ্টি পাওয়া যাবে। কর্মক্ষেত্রে অসন্তোষের কারনে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি কারো কাম্য নয়। সন্তুষ্টির প্রধান উৎস অবশ্যই কাজ নিজেই। কাজটি একজন ব্যক্তিকে কতটুকু আকর্ষণীয় এবং এর বাস্তবায়নে স্বাধীনতা দেয় এবং কাজের জন্য দায়বদ্ধতার অনুভূতি তৈরী করে।

কোনো প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ দিন কাজ করার পরেও অনেকের প্রমোশন বা পদোন্নতি হয়না কিংবা বেতন বাড়েনা। এনিয়ে মানসিক চাপে থাকেন তারা। যার প্রভাব পড়ে পারিবারিক জীবনেও। চাকরিতে পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধির প্রতি কর্মীর নিজেরই গুরুত্ব নেই। ফলে প্রতিষ্ঠানের ও আগ্রহ থাকে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মনে হবে এই কর্মীর পদোন্নতি প্রয়োজন নেই। নিষ্ঠাবান কর্মী যে কোন প্রতিষ্ঠানের সম্পদ । পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধির জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টির জন্য প্রস্তুতি থাকা দরকার। কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট কিনা সেটি জানা দরকার । কর্মীর কাজে প্রতিষ্ঠান সন্তুষ্ট থাকলে কোনভাবেই পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধিতে কর্তৃপক্ষ সাধারনত: কার্পণ্য করে না । কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হয়, চাকুরী জীবির কাজের প্রতি আন্তরিকতা ও দায়িত্ববান, যথা সময়ে করণীয় কাজ সম্পাদন।

আমাদের জীবনের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি সময় আমরা ব্যয় করি কাজে এবং এটি আমাদের জীবনের অন্যতম প্রধান কর্মকাণ্ড । অধিকাংশ চাকুরীজীবির প্রধান আর্কষন বা চাহিদা   থাকে কাজের শর্তাদি , বেতন-সুযোগ সুবিধার প্রতি। এটি অবশ্যই গুরত্বর্পূণ। তবে চাকুরীজীবির কাজের প্রতি আন্তরিকতা, করণীয় কাজের দায়বদ্ধতাও গুরত্বর্পূণ যা অনেক চাকুরীজীবিরা অবহেলা করে। চাকুরীতে সাধারনত সন্তুষ্টি অসন্তুষ্টির কারণ:- কাজের সঠিক পরিবেশে ; ব্যবস্থাপনা; কর্তৃপক্ষের আচরন; পারিশ্রমিকসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ; দলগত কর্মীবাহীনি; কাজের স্বীকৃতি ; বৈষম্য; কাজের চাপ; ইত্যাদি।কাজকে উপভোগ করা মানে জীবনকেও উপভোগ করা । বুঝতে হবে সন্তুষ্টি এবং সুখের মধ্যে পার্থক্য । সুখ মনের একটি অবস্থা আর সন্তুষ্টি হ’ল ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষা । উভয়ই একে অপরের সাথে । অনেকেই দেশে চাকুরী পাওয়ার পর কাজকে বা প্রতিষ্ঠানকে অবহেলা করে, অথচ বিদেশে আমাদের এই চাকুরীজীবিরাই যে কোন কাজ আন্তরিকতার সাথে দায়ত্ব ও ঝুঁকি নিয়েই করেন । সঠিক পেশাদারিত্ব নিয়ে দেশের মানুষ যদি দেশে আন্তরিকতার ও দায়ত্বনিয়ে কাজ করতো প্রচুর বৈদেশী মুদ্রার সাশ্রয় হতো। প্রতিটা প্রতিষ্ঠান ভালমন্দ নিয়েই চলে । কর্তৃপক্ষ কোন অবস্থাতেই চায় না তাঁর কর্মীবাহিনী অসন্তুষ্টি নিয়ে কাজ করুক, কর্মীকেই ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে । যা  অনেকের মধ্যেই পাওয়া যায় না । বিশেষ করে কিছুদিন কাজ করার পর দায়িত্ব এড়িয়ে চলার অভ্যাস, কাজের প্রতি বা প্রতিষ্ঠানের নেতিবাচক দিক নিয়ে সমালোচনায় জড়িয়ে পড়া । কাজের নেতিবাচক আলোচনা মন্তব্য কর্মীদের কাজের উপরই পড়ে । সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও পরিকল্পনা না থাকায় কিছুদিন কাজ করার পরই কাজে একঘেঁয়েমি চলে আসে, ফলে দায়িত্বে অবহেলা বিভিন্ন ধরনের অপেশাদারী অপর্কমে জড়িয়ে পড়ে  । কর্মী যদি মনে করে এই কাজ বা প্রতিষ্ঠান বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাঁকে যথাযত মূল্যায়ন করছে না মন খারাপ না করে অন্যত্র কাজ করাই ভাল । এতে মানষিক শান্তি আসবে । শরীর মন ভাল থাকবে।সবার সাথে সুসর্ম্পক থাকবে।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা,  সাদার্ন ইউনিভার্সিটি এবং টেকসই উন্নয়ন কর্মী; sjahan@southern.edu.bd