মুসলিম ব্রাদারহুডের ২৪ নেতার ফাঁসি

0
317

মুসলিম ব্রাদারহুডের ২৪ নেতার ফাঁসি

সুন্নি ইসলামিক সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের ২৪ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে মিশরের একটি আদালত। শুক্রবার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত দৈনিক আল আহরামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।পৃথক দুটি পুলিশ হত্যার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থাকার দায়ে বৃহস্পতিবার তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। উত্তর কায়রোর দামানহোর একটি অপরাধ আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

আল আহরামের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে মিশরের বেহেরিয়া প্রদেশের রাশিদ শহরে একটি পুলিশ বাসে বোমা হামলার দায়ে বেহেরিয়ার রাজধানী দামানহোরের আদালত ‘দামানহোর ক্রিমিনাল কোর্ট’ বৃহস্পতিবার ২৯ জুলাই২০২১ মুসলিম ব্রাদারহুডের ১৬ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। দণ্ডাদেশপ্রাপ্তদের মধ্যে সংগঠনের আঞ্চলিক নেতা মোহাম্মদ সোয়েদানের নামও ছিল। বৃহস্পতিবার আদালতের আদেশে বলা হয়েছিল, ওই হামলায় ৩ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছিলেন, আহত হয়েছিলেন অন্তত ৩৯ জন।

শুক্রবার একই আদালত মুসলিম ব্রাদারহুডের আরও ৮ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণা করেন। আদেশে আদালত বলেন- ২০১৪ সালে বেহেরিয়ার দিলিনজাত শহরে পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা ও এক পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় এই ৮ জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। মিশরের প্রচলিত আইন অনুযায়ী, ফাঁসিতে ঝুলিয়ে এই মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হবে।

দণ্ডাদেশ প্রাপ্তরা উচ্চ আদালতে শাস্তি মওকুফের আবেদন করতে পারবেন কি না – সে সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি আল-আহরামের প্রতিবেদনে, তবে আরবভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা শেহাব অর্গানাইজেশন ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ‘দামানহোর ক্রিমিনাল কোর্ট’ বিশেষ আদালত হওয়ায় দণ্ডপ্রাপ্তরা মিশরের অন্য কোনো আদালতে আদেশ পুর্নবিবেচনা বা দণ্ড মওকুফের আবেদন করতে পারবেন না।

২০১৩ সালে মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুরশি সরকার উৎখাত করে জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি ক্ষমতা দখল করেন। নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন। এরপর মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতাকর্মীদের ওপর সিসি সরকার দমন-পীড়ন শুরু করে। দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।এই সংগঠনটির প্রতি কঠোর হওয়া শুরু করে মিশর।আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ থেকে এ পর্যন্ত মুসলিম ব্রাদারহুডের ১০৭ জন নেতা-কর্মীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে দেশটির সরকার।

১৯২৮ সালে প্রতিষ্ঠিত মুসলিম ব্রাদারহুড মিশরের অন্যতম বৃহৎ মুসলিম সংগঠন, দলটির উদ্দেশ্য ছিল মুসলিমদের ব্যক্তিগত জীবনে ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করা। ধীরে ধীরে দলটি মিশরের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়। দশকের পর দশক জুড়ে দলটির নেতাকর্মীদের ওপর চালানো হয় অকথ্য নির্যাতন। দলটির নেতাকর্মীদের জেল, জুলম, জরিমানা করা হয় গণহারে।সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করেছে দেশটির সরকার। আরবের অন্যান্য দেশেও এই সংগঠনটি নিষিদ্ধ।

সূত্র : এজে