জাতীয় অধ্যাপক এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা জামিলুর রেজা চৌধুরী মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
সোমবার ২৭ এপ্রিল ভোর রাতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। অধ্যাপক চৌধুরী রাতে খাবার খেয়ে ঘুমাচ্ছিলেন, সেহেরির সময় পরিবারের সদস্যরা ডাকলে দীর্ঘ সময় তিনি সাড়া দেননি। এরপর পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হলে এক পর্যায়ে তাকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘুমের মধ্যেই তিনি মারা গেছেন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তার কোন অসুস্থতা ছিল না বলে জানিয়েছে পরিবার। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকে বাদ জোহর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী একাধারে ছিলেন বাংলাদেশের একজন খ্যাতনামা প্রকৌশলী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, তথ্য-প্রযুক্তিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা।
তার জন্ম ১৯৪২ সালে, সিলেটে। তিনি সেন্ট গ্রেগরিজ স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর তদানীন্তন আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বা এখনকার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সালে তিনি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেন। ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি বুয়েটে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৭ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন। ২০১৯ সালে জাপানের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘অর্ডার অব দ্য রাইজিং সান , গোল্ড রেইস উইথ নেক রিবন’ পান।
পেশাগত দায়িত্বের বাইরে তিনি আর্থকোয়েক সোসাইটি, পরিবেশ আন্দোলন বাপা এবং গণিত অলিম্পিয়াডের মত বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন দায়িত্ব যেমন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনের সফটওয়্যার রফতানি এবং আইটি সার্ভিস রপ্তানি-সংক্রান্ত টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি টাস্কফোর্সের একজন সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরবর্তী যত বড় বড় অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে, প্রতিটির সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা রয়েছে। যমুনা এবং পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়ার সঙ্গেও মি. চৌধুরী ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে। সর্বশেষ তিনি এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
