বিশুদ্ধ ইসলাম প্রচারের পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য ৫৬০টি মডেল মসজিদ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ৫০টি মডেল মসজিদ ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন আজ বৃহস্পতিবার জুন ১০। প্রতিটি জেলা, উপজেলা এবং উপকূল এলাকায় মসজিদগুলো তৈরি হচ্ছে। মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ তৈরী করতে ব্যয় হচ্ছে আট হাজার ৭২২ কোটি টাকা।
প্রকল্প পরিচালক মো. নজিবর রহমান জানান,” এই মসজিদ গুলি পরিচালনা করবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। বিশুদ্ধ ইসলাম প্রচারের পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে পরিণত হবে এই মসজিদগুলি ।
যে ৫০টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করা হচ্ছে তার মধ্যে পাঁচটি জেলা পর্যায়ে এবং ৪৫ টি উপজেলা পর্যায়ে। তিন ক্যাটাগরির মসজিদের মধ্যে জেলা ও মহানগরে ৬৯টি এবং বাকিগুলো উপজেলা উপকূলীয় এলাকায়। জেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রতিটি মসজিদ তৈরিতে ব্যয় হচ্ছে ১৫ কোটি ৬১ লাখ ৮১ হাজার টাকা। উপজেলা পর্যায়ে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং উপকূলীয় এলাকায় ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৮২ হাজার টাকা। শুরুতে এই প্রকল্পে সৌদি সরকারের অর্থায়নের কথা থাকলেও পরে তারা করেনি। এখন পুরো প্রকল্পটিই সরকারের অর্থে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন।
মসজিদ গুলি ৪০ শতাংশ জমির ওপর জেলা পর্যায়ে চার তলা, উপজেলা পর্যায়ে তিন তলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চার তলা ভবন। উপজেলা পর্যায়ের মসজিদে ৯০০ এবং জেলা পর্যায়ের মসজিদে এক হাজার ২০০ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারবেন। মসজিদে একই সঙ্গে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসাবে কাজ করবে এবং মহিলাদের জন্য রয়েছে আলাদা নামাজ পড়ার ব্যবস্থা । এছাড়াও থাকবে ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, লাইব্রেরি, অটিজম কর্ণার, ইমাম ট্রেনিং সেন্টার,ইসলামি গবেষণা ও দাওয়া কার্যক্রম, হেফজখানা, শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম, পর্যটকদের আবাসন, হজ্ব যাত্রীদের নিবন্ধন প্রভৃতি।
নজিবর রহমান জানান,” এই মসদিগুলোতে ইবাদতের পাশাপাশি আরো অনেক সামাজিক কর্মকাণ্ড হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রচারের পাশাপাশি নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ ও সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হবে। আর এই মসজিদগুলোর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো প্রতিবন্ধিদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা এবং তাদের মসজিদে প্রবেশের জন্য আলাদা থাকবে।”
শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ মনে করেন, এই মসজিদগুলো ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। কারণ বাংলাদেশে মসজিদগুলো ইবাদত কেন্দ্রিক। কিন্তু ইসলামে মসজিদের যে মূল ধারণা তা হলো ইবাদতের পাশাপাশি মসজিদগুলো সামাজিক কর্মকাণ্ডেরও প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে। কিন্তু এখানে তা হয়নি। তিনি বলেন,” মডেল মসজিদগুলো যে ধারণায় তৈরি হচ্ছে তাতে এগুলো সামাজিক কর্মকাণ্ডেরও প্রাণ কেন্দ্রে পরিণত হবে। এখানে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও থাকবে। মানুষকে সহযোগিতার অনেক উদ্যোগ থাকবে।”
তিনি আরো বলেন, মডেল মসজিদগুলোতে নিযুক্তরা সরকারি বেতন পাবেন। বাংলাদেশে অনেক মসজিদ আছে যার আয় অনেক। কিন্তু মসজিদ কমিটি ইমাম মুয়াজ্জিনদের সেরকম বেতন দেয় না। আবার অনেক মসজিদের অর্থিক অবস্থা খারাপ। ফলে এখন বেতনের ক্ষেত্রে একটি ভালো পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনসহ সাত হাজার জনবল নিয়োগের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।