উপজেলা নির্বাচনের প্রথম দফায় সবচেয়ে বড় চমক দেখিয়েছে জামায়াতে ইসলাম। অন্যদিকে হাওয়ায় বিলীন হয়ে গেছে সাবেক স্বৈরশাসক এইচএম এরশাদের জাতীয় পার্টি।
জামায়াতের নেতারা হয় যুদ্ধাপরাধ মামলায় দণ্ডিত নতুবা চার দেয়ালের মাঝে বন্দী। গত ৫ বছর যাবৎ রাষ্ট্রশক্তি প্রতি মুহূর্তে দলটির নেতাকর্মীদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে। দল হিসেবেও জামায়াত এখন কার্যত নিষিদ্ধ।
এ অবস্থায় এককভাবে নির্বাচন করে জামায়াতের প্রার্থীরা জিততে পারবে তা হয়তো অনেকে বিশ্বাস করতে চাননি। কেউ একটু বেশি উদারপন্থি হলে বড়জোর বিচ্ছিন্ন দুয়েকটি জায়গায় তাদের জয়ের সম্ভাবনা দেখছিলেন।
নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেল বিচ্ছিন্ন দু’একটি জয় নয়, জামায়াত ১৩টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মত দেশের দুটো বড় দলের সাথে লড়াই করেই দলটি এ জয় পেয়েছে।
মোট ৯৭টি উপজেলার প্রাপ্ত ফলাফলে বিএনপি ৪৩, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা ৩৫, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৫ উপজলোয় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। জাতীয় পার্টির ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ১টি আসন।
জামায়াতে এই জয় অন্য একটি দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ এই কারণে যে বেশিরভাগ উপজেলাতেই জামায়াতের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিল না।
নির্বাচনে ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, স্বল্প সংখ্যক উপজেলায় প্রার্থী দিয়েও জামায়াত আওয়ামী লীগের প্রায় অর্ধেক এবং বিএনপির এক তৃতীয়াংশ আসনে জয় পেয়েছে।
অন্যদিকে জামায়াত আরো বেশি ভালো করেছে, ভাইস চেয়ারম্যান পদে।
দৈনিক সমকালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে জামায়াতের ২৩ জন জয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগ জিতেছে জামায়াতের চেয়ে একটি মাত্র বেশি আসনে- ২৪টিতে। বিএনপি জিতেছে ৩২টি স্থানে।
জামায়াতে ইসলামকে অনেকে ’নারীবিদ্বেষী’ বা মৌলবাদী বললেও সমকালই জানাচ্ছে, অন্তত ১০টি উপজেলায় নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াতের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। এক্ষেত্রে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ জিতেতে ৩৪টি করে উপজেলায়।
তবে নির্বাচনে অপ্রত্যাশিত পতন ঘটেছে এরশাদের জাতীয় পার্টির। একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসালেও কার্যত জাতীয় পার্টি এখন রাজনীতিতে যে ‘ডেড হর্স’ -তা এই নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে।
একটি মাত্র উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জয় নিয়েই দলটিকে অনিশ্চিত গন্তব্যে যাত্রা শুরু করতে হবে। অন্যদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন নারীসহ ৪টি জয় পেয়েছে ঝড়ের গতির মতই দ্রুত দিক পরিবর্তনকারী এই দলটি।
গ্রাফিক্স: সমকালের সৌজন্যে।