ওরে ভাই, ফাগুন লেগেছে বনে বনে/ডালে ডালে ফুলে ফুলে পাতায় পাতায় রে/আড়ালে আড়ালে কোণে কোণে…’। আজ পহেলা ফাল্গুন। উন্মনা হাওয়ায় মনে দোলা লাগানো বসন্তের প্রথম দিন। প্রকৃতিতে তার ছোঁয়া সবখানে। প্রকৃতি সেজে উঠছে নানা রঙে। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে প্রকৃতির মতো মানুষের মনেও ছড়িয়ে পড়ে বসন্তের রঙ।
বসন্তকে বরণ করে নিতে তাই প্রকৃতির রঙে রঙ মিলিয়ে সবাই মেতে ওঠে উৎসবে। ‘ফুল ফুটুক-আর নাই বা ফুটুক-আজ বসন্ত।’ বাঙালির প্রিয় কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় বসন্তকে প্রতিভাত করে গেছেন এই একটি বাক্যেই।`
বসন্ত আজ এসেছে ফুলবনে, পাতায় পাতায় পল্লবে, পল্লবে। ডালে ডালে পলাশ, শিমুল আর বকুলের সৌরভে শীতের ঝড়া পাতার মর্মরে মর্মরে আজ থেকে ধ্বনিত হবে বসন্তের কোকিলের কহু কহু তান। পৌষ আর মাঘের শীতার্ত দিনগুলোর পরে ফ্লাগুন মাসের প্রথম দিনে বাঙালি বরণ করে নেবে তাদের প্রিয় বসন্তকে।
বাঙালি ললনার পরনে হলুদ রঙের শাড়ীতে লাল পাড় আর তরুণ-যুবাদের হলুদ পাঞ্চাবী, কোর্তা গায়ে দিয়ে বসন্তের প্রথম দিনে আজ জমজমাট হয়ে উঠবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির চত্বর, বই মেলা, চারুকলার বকুলতলা, শাহবাগ আর রমনার সবুজ প্রান্তর।
‘আজি নব বসন্তের প্রভাতের লেশমাত্র ভাগ আনন্দের / লেশমাত্র ভাগ, আজিকার কোনো ফুল/ বিহঙ্গের কোনো গান/ আজিকার কোনো রক্তরাগ/ অনুরাগে সিক্ত করি পারিবো কি পাঠাইতে তোমাদের তরে!’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালি জাতির কাছে বসন্তের প্রথম দিনটিকে এভাবেই সম্বোধন করে গেছেন আজ থেকে শত বছর আগে।
আজ বেজে উঠবে সুরে সুরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই গান ‘ফুলে ফুলে দুলে দুলে বহে কে বা মৃদু বায়ে/ কে জানে কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়।’ রেকর্ডে বেজে উঠবে লতা মুঙ্গেশকরের সেই গান-‘পাখি আজ কোন সুরে গায়/ কোকিলের ঘুম ভেঙে যায়/ আজ কোনো কথা নয়/ শুধু গান/ আরো গান/ আজ বুঝি দু’জনের মন/ কতো সুরে করে আলাপন/ আজ কোনো কথা নয়/ শুধু গান আরো গান