আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগার উদ্বোধন
এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় ‘আরবান পাবলিক অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল হেলথ সেক্টর ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পের অধীনে সাত সিটি কর্পোরেশনে এ আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগার নির্মাণ করা হচ্ছে।এই প্রকল্পের অধীনের ঢাকায় আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগারের কার্যক্রম চালু করা হলো।খাদ্যসামগ্রীর মান নিশ্চিতের জন্য সিটি করপোরেশনকে দায়িত্ব প্রদান করা হলেও মান নির্ণয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ছিল না। এই পরীক্ষাগার মাধ্যমে মান নির্ণয়ের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে অর্জন হতে পারে।
বৃহস্পতিবার ০২ জুলাই দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবাজারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম । তিনি বলেন, ‘মানুষের ইমিউনিটি বাড়লে ভাইরাস সহজেই তাকে কাবু করতে পারে না। আর মানুষের ইমিউনিটি নির্ভর করে ফুড-সাইকেলের ওপর। খাদ্যে ভেজাল থাকলে মানুষ সহজেই ছোট-খাটো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়।’ উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অধিকাংশ মানুষ প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ায় তাদের ইমিউনিটি কমে গিয়েছিল। এর ফলে যুদ্ধের চাইতেও যুদ্ধপরবর্তী সময়ে ছোট-খাটো ভাইরাসের আক্রমণে অনেক বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল।’
অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ডিএসসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগারটিকে ইউরোপীয় দেশগুলোর মত উন্নতমানের উল্লেখ করে, এটি নগরবাসীকে ভেজালমুক্ত খাবার উপহার দিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য হাসপাতাল তৈরি এবং চিকিৎসার মান উন্নয়নের পাশাপাশি ভেজালমুক্ত খাবার প্রয়োজন। আমাদের যেমন হাসপাতাল তৈরি করতে হবে, চিকিৎসার মান উন্নয়ন করতে হবে, তেমনি মানুষের কাছে বিশুদ্ধ এবং ভেজালমুক্ত খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে বিশুদ্ধ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের বিকল্প নেই।’
ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “আগে যখন বিভিন্ন কোম্পানির ভেজাল পণ্যের ওপর জরিমানা করা হতো, তখন তারা সরকারের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিত। তাদের যুক্তি ছিল, আমরা তাদের খাদ্যসামগ্রীর যথাযথ মান পরীক্ষা করেছি কি না বা করলেও পরীক্ষায় তার সঠিক প্রতিফলন হয়েছে কি না? এ রকম অনেকগুলো মামলা এখনও বিচারাধীন রয়েছে। কিন্তু এই পরীক্ষাগার চালু হওয়ায় এখন থেকে খাদ্যে ভেজাল মেশানো ব্যবসায়ীরা তাদের মানহীন পণ্যের বিরুদ্ধে আরোপিত জরিমানা নিয়ে আর কোনো ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না।”
ডিএনসিসি মেয়র খাদ্য পরীক্ষারগারের মান নিয়ে বলেন, “এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পরীক্ষাগার ফলে এখন থেকে আমরা সব ধরনের পণ্যের মান সঠিকভাবে নিরুপণ এবং ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারব। তাই ঢাকাবাসীর জনস্বাস্থ্য তথা স্বাস্থ্যকর খাদ্য নিশ্চিত করতে এ আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগারটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
![](http://dakhina.com/wp-content/uploads/2020/03/unnamed.jpg)