বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে চীন সফরে থাকলেও সেখানে বসেই টাইগারদের খেলা উপভোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের খেলা প্রধানমন্ত্রীর মনে দাগ কেটেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘চীনে বসেও আমি বিশ্বকাপ খেলা দেখেছি। আমার জন্য খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আমি যেমন অফিসিয়াল কাজও করেছি, খেলাও দেখেছি। হয়ত এক পার্ট দেখেছি, অন্য পার্ট দেখিনি। আমাদের ছেলেদের যে আত্মবিশ্বাস দেখেছি, সেটা প্রশংসাযোগ্য।’
সোমবার (৮ জুলাই) বিকেল ৪টায় গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। চীনে সরকারি সফর সংক্রান্ত খবরাখবর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন সরকার প্রধান।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বকাপ জেতা এক একটি নামিদামি দলের সঙ্গে খেলা কিন্তু কম কথা নয়। বাংলাদেশের পারফরম্যান্স কিন্তু বিশ্বকাপে চমৎকার ছিল। ও হ্যাঁ, আমরা যে বিশ্বকাপে খেলতে পেরেছি বা এতদূর যেতে পেরেছি সেটাও কিন্তু কম কথা নয়।
বাংলাদেশের খেলায় যথেষ্ট উন্নতি করেছে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্বের নামি দামি দলের সঙ্গে খেলা কিন্তু কম কথা না। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ টিমের পারফরম্যান্স অনেক চমৎকার ছিল। আমাদের সাকিব বিশ্বে একটা স্থান করে নিয়েছে, মোস্তাফিজ একটা স্থান করে নিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খেলা এমন একটা জিনিস, এখানে সবসময় ভাগ্য লাগে। কিন্তু আমাদের ছেলেরা বিশ্বের জাদরেল টিমগুলোর বিপক্ষে যে সাহসী মনোভাব নিয়ে মোকাবিলা করছে; আমি এটার প্রশংসা করি।’
টাইগারদের পারফরমেন্স নিয়ে সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বকাপে এতগুলো দেশ খেলল কিন্তু চারটি টিম সেমিফাইনালে গেল। তারমানে কী বাকি সবগুলো দলই কী খারাপ করেছে? আমরা নিজেরা নিজেদেরকে এত ছোট করি কেন? আমার ছেলেদেরকে কেউ খারাপ বলতে পারবেন না।’
তাঁর প্রথম সরকারের সময় বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফি জিতেছিল, বিশ্বকাপে গিয়েছিল, সেসবও মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী, ‘আরও একটা জিনিস খেয়াল করেন। আসলে খেলোয়াড় হিসেবে আসছে কারা, আপনি খেলোয়াড় পাচ্ছেন কোত্থেকে, কত জন পাচ্ছেন। প্রথম যখন সরকারে ছিলাম, আমাদের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ক্রীড়া মন্ত্রী ছিলেন, তখন থেকেই আমাদের মনোযোগ ছিল, আমাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা যেন বিভিন্ন খেলাধুলায় মনোযোগী হয়। সেই পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। ছোট থেকে অভ্যস্ত করে করে, অনুশীলন করে করে, তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগানো হয়েছে। তাদের তৈরি করা হয়েছে। ধীরে ধীরে বাংলাদেশ কিন্তু ভালো করছে। এগিয়ে যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রীর ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদের প্রতি আবেগটাও প্রকাশ পেয়ে যায়, ‘এখানে দোষ দেওয়ার কিছু নাই। দোষ যদি দিতেই হয়, ওই চারটি দল (যারা সেমিফাইনালে গেছে) বাদ দিয়ে বাকি সব দলকেই দোষ দেন। খালি বাংলাদেশকে দোষ দেবেন না। আমি আমার ছেলেদের কখনো নিরুৎসাহিত করি না। আমি বরং ফোন করে ওদের বলি, খেলো তোমরা, তোমরা ভালো খেলেছ। ৩৮১ রান তাড়া করে (অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে) বাংলাদেশ ৩৩৩ রান করল। আপনারা চিন্তা করে দেখেন। তাহলে আপনারা খারাপ বলবেন কীভাবে? আমার ছেলেদের কেউ খারাপ বলতে পারবেন না।’
সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন প্রমুখ।