মিল্ক ভিটা, ডেইরি ফ্রেশ, ঈগলু, ফার্ম ফ্রেশ, আফতাব মিল্ক, আল্ট্রা মিল্ক, আড়ং, প্রাণ মিল্ক, আয়রন, পিউরা ও সেফ ব্র্যান্ডের পাস্তুরিত দুধ পরীক্ষা করে অতিরিক্ত মাত্রায় সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই তথ্য জানিয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ওই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
আদালতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম। এ সময় বিএসটিআই’র পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সরকার এমআর হাসান (মামুন)। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না।
এছাড়া প্রতিবেদনে গোখাদ্যের ১২ নমুনা সংগ্রহ করে আইসিডিডিআরবি, বিসিএসআইআরসহ চারটি ল্যাবে পরীক্ষা করে এ রিপোর্ট দাখিল করে সংস্থাটি। যদিও বিএসটিআই ৩০৫ নমুনা সংগ্রহ করে মাত্র দুটি ব্র্যান্ডের দুধে ক্ষতিকারক উপাদান পাওয়ার কথা জানিয়েছে।
তবে প্রতিবেদনের বিষয়ে শুনানি শেষে দুগ্ধ খামারিদের পশু ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া গাভিকে কোনও ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের রিপোর্ট অনুযায়ী ক্ষতিকারক উপাদান থাকা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা আগামী ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে জানাতে বিএসটিআই ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
পরে আদালত দুধে সিসা মিশ্রণকারীদের শাস্তির আওতায় আনার ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন। এছাড়া রুলে দুগ্ধজাত খাবারে ভেজাল প্রতিরোধে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি খাদ্যে ভেজালের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির (মৃত্যুদণ্ড) নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
পাশাপাশি আদালত ঢাকাসহ সারা দেশের বাজারে কোন কোন কোম্পানির দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্যে কী পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া, কীটনাশক এবং সিসা মেশানো রয়েছে, তা নিরূপণ করে একটি জরিপ প্রতিবেদন তৈরির নির্দেশ দেন। জাতীয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। যার ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টের নির্দেশের পর বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. মাহবুব কবিরকে আহ্বায়ক করে ১৬ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়। এরপর ওই কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আজ সেই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলো।
বিএম/এমআর