গুজব ছড়ানো এবং ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে সমাজের সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে একত্রিত করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও)।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বুধবার (২৪ জুলাই) বিকেলে তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং দপ্তরকে নিয়ে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত এক সমন্বয় সভায় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার পাশাপাশি দেশব্যাপী চলমান বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থানকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সার্বিক পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক দৃষ্টি রাখার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দিয়ে যাচ্ছেন।
সমন্বয় সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। সভায় গুজব, ডেঙ্গু এবং বন্যা প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, দপ্তর, বিভাগ এবং সিটি কর্পোরেশনগুলো এ সম্পর্কে নিজস্ব পরিকল্পনা-প্রস্তুতি এবং পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরেন।
পিএমও এ সময় ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে তাদের মশক নিধন অভিযানকে জোরদার করার আহবান জানায়।
সেইসাথে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি ডেঙ্গুরোগীর প্রতি বিশেষ নজর প্রদানে প্রতিটি হাসপাতালে বিশেষ মেডিকেল টিম গঠনের নির্দেশনা প্রদান করে। বৈঠকে বৃহস্পতিবার থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে ‘সচেতনতা সপ্তাহ’ পালনের সিদ্ধান্ত হয়। যার মধ্যে রয়েছে লিফলেট বিতরণ, মাইকিং এবং গণমাধ্যমে প্রচারণা চালানো।
পিএমও সকল সরকারি দপ্তরগুলোকে নিজস্ব অফিস এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে ডেঙ্গু প্রতিরোধের আহবান জানায়।
জনগণের বাড়ি-ঘড় এবং আশপাশের এলাকা বিশেষকরে কোন পাত্রে বা ফুলের টবে জমে থাকা পানি, এয়ার কন্ডিশনার এবং রিফ্রিজারেটর থেকে নির্গত স্বচ্ছ পানি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে উক্ত স্থান শুষ্ক রাখার জন্যও সভায় আহবান জানানো হয়।
পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য মানুষের মাথার প্রয়োজন বলে সারাদেশে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের ছড়ানো গুজব সম্পর্কে বৈঠকে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতি গুজব ছড়ানো ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ববস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরসঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি (চেয়ারম্যান, মেম্বার, গ্রামপ্রধান), শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর সদস্যদের সম্পৃক্ত করে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
জনগণকে এসময় যেকোন ধরনের গুজব সম্পর্কে সজাগ করে তুলতে গণমাধ্যম বিশেষ করে টিভি চ্যানেলগুলোকে ভূমিকা পালনের আহবান জানানো হয়।
দেশের চলমান বন্যা সম্পর্কে বৈঠকে প্রকৃত দুর্গতদের মাঝে যথাসময়ে বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী যেমন- চাল, বিশুদ্ধ খাবার পানি, শুকনো এবং রান্নাকরা খাবার পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
সেইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে বন্যা দুর্গত এলাকায় যাতে রোগ-জীবাণু না ছড়িয়ে পড়তে পারে সেজন্য জন্য মেডিকেল টিম গঠন এবং বন্যার পানি নেমে গেলে দ্রুত পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণে প্রস্তুত থাকার আহবান জানানো হয়।
বন্যা দুর্গত এলাকায় এ সময় পর্যাপ্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বৈঠককে অবহিত করা হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্বে করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’র (বিআইডিএ) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
বিএম/এমআর