যুদ্ধপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীকে অপসারণ
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীকে অপসারণ করা হয়েছে। শৃঙ্খলা ও পেশাগত আচরণবিধি ভঙ্গ ও অসদাচরণের দায়ে তাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।রবিবার আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর প্রসিকিউটর হিসেবে তিনি নিয়োগ পান। গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগ উঠায় ২০১৬ সালে তাকে মামলা পরিচালনার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।ওই বছরই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গত ১১ নভেম্বর যুদ্ধাপরাধ মামলার এক আসামির সঙ্গে গোপন বৈঠকের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনালের আরেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে অপসারণ করে সরকার।
গুরুতর অসদাচরণের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিম থেকে প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীকে অপসারণ করেছে আইন মন্ত্রণালয়। রোববার আইন মন্ত্রণালয়ের উপ সলিসিটর (জিপি/পিপি) মো. মনিরুজ্জামানের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীকে শৃঙ্খলা ও পেশাগত আচরণ ভঙ্গ এবং গুরুতর অসদাচরণের দায়ে ৫ অক্টোবর ২০১১ তারিখে প্রদত্ত নিয়োগ বাতিলক্রমে প্রসিকিউটর পদ হতে অপসারণ করা হলো।’এর আগে ২০১৬ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ আলীকে প্রসিকিউশনের সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
চিফ প্রসিকিউটরের পক্ষ থেকে পাঠানো অব্যাহতি পত্রে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলির কার্যালয়ের প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীকে শামসুল হক গং(রেজি নং-৩৭, তাং- ১২/১০/২০১৪), শামসুল হোসেন তরফদার এবং অন্যান্য মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টতা থেকে প্রত্যাহার করা হলো। পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পরিচালনাধীন কোনো মামলা পরিচালনার কাজে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়া হলো। এ আদেশটি জনস্বার্থে দেয়া হলো।
তবে প্রসিকিউশন সূত্র থেকে জানা যায়, ময়মনসিংহের জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি হান্নানের মামলায় মোহাম্মাদ আলী প্রসিকিউটরসুলভ আচরণ করেননি। যার কারণে প্রসিকিউশন থেকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হতে হয়েছে। তাছাড়া এর আগেও প্রসিকিউশনের অন্য সদস্যরা মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে পেশাগত অসদাচরণের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ২০১৪ সালের জুন মাসে প্রসিকিউটরদের মধ্যে পাল্টা-পাল্টি অভিযোগের ঘটনা ঘটে। প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী অপর প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আর্জি জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ হায়দার আলী বরাবর আবেদন করেন।
পরে প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে মানসিক হয়রানির অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চিফ প্রসিকিউটর বরাবর আবেদন জানান। ২০১৪ সালের মার্চে তুরিন আফরোজ ও মোহাম্মদ আলী আরেক দফা পরস্পরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এনেছিলেন। সেসময় আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘প্রসিকিউশন টিমের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থাকলেও কাজে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কাজ ঠিকমতোই চলছে। তবু আমি সমস্যা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবো।’