হস্তক্ষেপমুক্ত বিচার বিভাগ চান বিচারপতিরা
হস্তক্ষেপমুক্ত বিচার বিভাগ চাইলেন আপিল বিভাগের বিচারপতিরা। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে বিচারপতি মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, বিচার বিভাগ কারও নির্দেশে চলতে চায় না। আর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, দুপুরের পর এজলাসে না বসার অভিযোগের বিষয়ে সতর্ক করেন নিম্ন আদালতের বিচারকদের।
দেশের সর্বোচ্চ ও নিম্ন আদালতের সব বিচারকদের মিলন মেলা বিচার বিভাগীয় সম্মেলন। বলা যায়, এই একটি দিন সব বিচারক এক হয়ে তুলে ধরেন নিজেদের পাওয়া না পাওয়ার কথা। আর সে কারণেই বিচার বিভাগে এ সম্মেলনের গুরুত্ব অন্যরকম।
প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনের উদ্বোধন করে যাওয়ার পর দ্বিতীয় অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন নিম্ন আদালতের বিচারকেরা। মাদক ও চেক জালিয়াতিসহ একাধিক আইনের সংশোধন চান তারা।
বিচারকরা বলেন, বেশকিছু আইনে আদালত প্রতিষ্ঠার বিধান থাকলেও সেখানে ম্যাজিস্ট্রেটদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে আদালত পরিচালিত হচ্ছে। যেমন- পরিবেশ আদালত আইন, নিরাপদ খাদ্য আইন ও দ্রুত বিচার আইন।
তাদের এ দাবির সঙ্গে একাত্ম আপিল বিভাগের প্রায় সব বিচারপতিই। আপিল বিভাগের বিচারপতি নুরুজ্জামান বলেন, তারা চান হস্তক্ষেপমুক্ত বিচার বিভাগ। আর আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ইমান আলী বলেন, এ যুগেও এজলাশ ভাগ করে বসা দুঃখজনক।
বিচারপতি নুরুজ্জামান বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আমরা প্রত্যেকেই স্বাধীন। হোক সে সহকারী জজ, হোক সে ম্যাজিস্ট্রেট। বিচার দেওয়ার বেলায় সে স্বাধীন। কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। আমরা কারো হস্তক্ষেপ চাই না। হস্তক্ষেপবিহীন বিচার বিভাগ আমরা প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
বিচারপতি ইমান আলী বলেন, এই যুগে কোর্ট রুম শেয়ার করতে হয়। সকালে একজন বসে আর দুপুরে আরেকজন বসে। এটা দুঃর্ভাগ্যজনক।
নিম্ন আদালতের বেশিরভাগ বিচারক, দুপুরের পর বিচার কাজ পরিচালনা করেন না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ২টার আগে সমস্ত কোর্টে (সিভিল ও ক্রিমিনাল) ট্রায়াল হবে। এটা বারবার আমার কোর্ট থেকে নির্দেশনা যাচ্ছে। আমি বিভিন্ন জায়গায় টেলিফোন করে দেখলাম যে আমার এটা ইমপ্লিমেন্ট হচ্ছে কি না। আমি সাতজনকে টেলিফোন করেছি তার মধ্যে তিনজনকে পেয়েছি আড়াইটার সময়।
কর্মঅধিবেশনের দুই পর্বেই কিছুটা বিশৃঙ্খলা ছিলেন নিম্ন আদালতের বিচারকরা। মঞ্চে আপিল বিভাগের ৬ জন বিচারপতি সময় মতো উপস্থিত হলেও, তাদের অনেকেই এলোমেলে ঘুরাফিরা করছিলেন। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি ইমান আলী।