সাদার্ন ইউনিভার্সিটির উদ্যোগে পুরকৌশল বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু

0
543
????????????????????????????????????

সাদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ’র পুরকৌশল বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুদিনব্যাপী রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (আইসিআরআইসিই)’ শীর্ষক দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন-২০২০। চলবে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত। আজ শুক্রবার সকালে ইনস্টিটউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) চট্টগ্রাম কেন্দ্রে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আইইবি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান। সাদার্ন ইউনিভার্সিটির পুরকৌশল বিভাগের উপদেষ্টা ও চুয়েটের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ইঞ্জিনিয়ার মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের প্রথম দিনে অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাদার্ন ইউনিভার্সিটির উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর সরওয়ার জাহান, সাদার্ন ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশ’র ভারপ্রাপ্ত উপ-উপাচার্য ও কনফারেন্স সেক্রেটারি অধ্যাপক (প্রকৌশলী) এম আলী আশরাফ, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শরীফুজ্জামান, আমিরিকা ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের প্রকৌশলী ও গবেষকগণ , বিভিন্ন বিভাগের উপদেষ্টা, বিভাগীয় প্রধানসহ প্রকৌশলীবৃন্দ। এদিকে সম্মেলনে উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান বলেন, প্রকৌশলীরাই একটি দেশকে এগিয়ে নিতে পারে, তাদের পরিকল্পনায় দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ স্থাপত্যের শৈল্পিক রূপ ফুটে ওঠে। বিশ্বের অনেক বিখ্যাত স্থাপত্যের কারিগর কিন্তু বাংলাদেশী মেধাবী প্রকৌশলীরা। সাদার্ন ইউনিভার্সিটি ধন্যবাদ জানাচ্ছি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সম্মেলন আয়োজনের জন্য। সম্মেলনের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি গবেষকদের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি হয় যেখান থেকে পরিকল্পিত নগরায়নের রূপরেখার বিভিন্ন সূত্র বেরিয়ে আসে। সম্মেলন হচ্ছে গবেষকদের গবেষণা উপস্থাপন করার একটি চমৎকার উপলক্ষ। আর এ ধরনের আয়োজন থেকে তরুণ প্রকৌলীরা অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি নতুন নতুন গবেষণায় উৎসাহিত হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রকৌশলীদের নির্মাণশৈলীতে অনেক বিষয় মাথায় রেখে সমন্বয় সাধন করতে হয়, একটি সুপরিকল্পিত উদ্যোগ দেশের সামগ্রিক চিত্রকে বদলে দিতে পারে। ঠিক তেমনি প্রকৌশলীদের গাফিলতি বা দুর্নীতির কারণে দেশের বড় ধরনের ক্ষতির হুমকি থাকে। আশা করি সম্মেলনের উপস্থিত তরুণ প্রকৌশলীরা নিজেদের মেধাকে দেশে কল্যাণে কাজে লাগাবে।

প্রফেসর সরওয়ার জাহান বলেন, শুধু সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নয় সাদার্ন ইউনিভার্সিটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সম্মেলনের আয়োজন করে থাকে। শিক্ষার্থীদের গুণগত ও বিশ্বমানের শিক্ষায় গড়ে তুলতে এ উদ্যোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে গবেষণাধর্মী শিক্ষাকে উৎসাহিত করা। আজকের সম্মেলন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের মিলনমেলা, যারা জনগণের জন্য কাজ করে তারাই সিভিল ইঞ্জিনিয়ার।

প্রফেসর ইঞ্জিনিয়ার মোজাম্মেল হক বলেন, সমাজের চাহিদা অনুযায়ী ইঞ্জিনিয়ারদের আলাদা আলাদা ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে ফলে দক্ষ প্রকৌশলীদের নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ রয়েছে। শুধূমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নয় বরং জীবনের সাফল্যের জন্য যুগোপযোগী শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে।

প্রফেসর ড. শরীফুজ্জামান বলেন, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং একটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশ তাই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের প্রফেশনাল কোড মেনেই কাজ করতে হবে। কোনোভাবে নিমার্ণ ব্যয় কমিয়ে ঝুঁিকপূর্ণ স্থাপনা তৈরি করা যাবে না। সাদার্ন ইউনিভার্সিটির পুরকৌশল বিভাগের এ সম্মেলনের মাধ্যমে তরুণ গবেষকরা ইঞ্জিনিয়ারিং এ নতুন নতুন বিষয়ে ধারণা লাভ করবে।

সম্মেলনের প্রথম সেশনে কি-নোট স্পিকার পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সাবেক প্রধান কো-অর্ডিনেটর মেজর জেনারেল আবু সাঈদ মাসুদ তাঁর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ ও বাস্তবায়ন সম্পর্কে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
চ.ঞ.ঙ
২য় দিনের আয়োজন সাদার্ন ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস বায়েজিদ আরেফিন নগরে অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের সমাপণী অনুষ্ঠান হবে হোটেল পেনিনসুলায়। সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়গুলো হলো: স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্থকোয়াক ইঞ্জিনিয়ারিং, জিওটেকনিক্যাল অ্যান্ড ফাউন্ডেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ট্রাফিক অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, ওয়াটার রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং, ফ্লাড কন্ট্রোল অ্যান্ড মিটিগেশন, এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেটেরিয়ালস্ ইঞ্জিনিয়ারিং, কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, আর্বানাইজেশন অ্যান্ড বিল্ট এনভায়রনমেন্ট, অ্যাডভান্সেস ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এডুকেশন।

আমিরিকা ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মরত সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এবং গবেষকদের পাঠানো গবেষণা যাচাই-বাছাইয়ের পর ৪৭টি গবেষণাপত্র নির্বাচন করা হয়েছে। সম্মেলনে ৩টি কি-নোট সেশন ও ৮টি টেকনিক্যাল সেশন। দু’দিনের সম্মেলনে কি-নোট স্পিকাররা হচ্ছেন পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সাবেক প্রধান কো-অর্ডিনেটর মেজর জেনারেল আবু সাঈদ মাসুদ, অ্যামেরিকান সোসাইটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এডুকেশন, এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স এর সাবেক ডিরেক্টর প্রফেসর ড. উইলিয়াম ই কেলি, পি.ই হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্স ইনস্টিটিউট এর ডিরেক্টর জেনারেল ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শামিম আক্তার এবং অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ড এর সিনিয়র লেকচারার ড. রেজাউল চৌধুরী। সমাপণী পর্বে বেস্ট পেপার অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে।