মেরিন ড্রাইভে আল্টা ম্যারাথন

0
529

ঘড়ির কাঁটা তখন ৬টা ১০ মিনিট, দিনটি ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার। কক্সবাজারের পূর্ব আকাশে তখনো সূর্য দেখা যায়নি। ঠিক তখন মেরিন ড্রাইভ সড়কের ইনানী থেকে শুরু হয় ম্যারাথন দৌঁড়।

এটি প্রথমবারের মতো কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কে আল্টা ম্যারাথনের প্রতিযোগিতা। ‘ভ্রমণ হোক দায়িত্বশীল’ এই স্লোগানে ৩টি ক্যাটাগরিতে অংশ নিয়েছে দেশি-বিদেশি শতাধিক প্রতিযোগি।

অল্প সময়ে ইনানী সৈকত, এরপর পাতোয়ারটেক পয়েন্ট অতিক্রম। তারপর সূর্যের আলো দেখা। সব মিলিয়ে প্রথমবারের মতো মেরিন ড্রাইভে ম্যারাথনে অংশ নিতে পেরে দারুণ খুশি প্রতিযোগীরা।

প্রতিযোগী রিয়াদ হোসেন বলেন, অনেক দূর থেকে ভ্রমণ করে শুধু মেরিন ডাইভে আল্টা ম্যারাথনে অংশ নেয়ার জন্য কক্সবাজারে আসা। এখন ঠিক সময়ে উপস্থিত হতে পেরে ভালো লাগছে।

আরেক প্রতিযোগী জামশেদ বলেন, রোমাঞ্চকর এক অনুভূতি। জীবনে প্রথম আল্টা ম্যারাথন। দেশের মাটিতে তিন পর্বের ম্যারাথন এটিই প্রথম। অন্যরকম এক যাত্রা।

প্রতিযোগী জাহেদ ও সালেহীন বলেন, মেরিন ড্রাইভে আল্টা ম্যারাথন উপভোগ করেছেন। কারণ এটি তার প্রথমবার, এর আগে কোনো ম্যারাথনে অংশ নেয়ার  সুযোগ আসেনি। উপভোগ করেছেন। যদিও পুরো দূরত্বটা শেষ করতে পারেননি; তাহলে আরো ভালো লাগতো।

অরণ্যঘেরা পাহাড় আর বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত। এরই মাঝে পিচঢালা পথ। এ পথের নাম মেরিন ড্রাইভ। যা গিয়ে শেষ হয়েছে টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে। প্রতিযোগীরা বলছেন, মাদকমুক্ত সমাজ ও পর্যটকদের পরিবেশ রক্ষায় সচেতন করতে এই আয়োজনে তাদের অংশ নেয়া।

প্লাবন নামে এক প্রতিযোগী বলেন, আল্টা ম্যারাথনে অসাধারণ অনুভূতি। মেরিন ড্রাইভে একপাশে সাগর আর অন্যপাশে পাহাড় অসাধারণ লেগেছে। খুবই উপভোগ করেছেন এই ম্যারাথন।

প্রতিযোগী সিয়াম আহমেদ বলেন, সাগর আর পাহাড় উপভোগের উত্তম স্থান এই মেরিন ড্রাইভ। কারণ পৃথিবীর কোথাও মনে হয় এ ধরনের স্থান নেই। যারা এই আল্টা ম্যারাথন আয়োজন করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানান তিনি।

প্রতিযোগী শোয়েব ও তৌহিদ বলেন, সৈকতের পরিবেশ যাতে দূষিত না হয়;  যেখানে সেখানে প্লাস্টিক না ফেলার ব্যাপারে স্থানীয় ও পর্যটকদের সচেতন করতে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া।

আর আয়োজকরা বলছেন, ম্যারাথনের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ, পর্যটনের উন্নয়ন এবং সৈকত ও সৈকতপাড়ের জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য এই আয়োজন।

মেরিন ড্রাইভ আল্টা ম্যারাথনের রেস ডাইরেক্টর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, এই ধরনের প্রতিযোগিতায় তরুণদের অংশ নেয়া খুব দরকার। তিনি আশা করেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিবছর এই আয়োজন অব্যাহত থাকবে।

কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্র সৈকত থেকে টেকনাফ সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত তিন ক্যাটাগরিতে যথা ৫০, ১০০ ও ১৬১ কিলোমিটার দূরত্বের এই আল্টা ম্যারাথনের সময়সীমা ১০, ২৪ ও ৩৬ ঘণ্টা।