স্বাধীন রাষ্ট্রের যা প্রয়োজন সবই করে দিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু: প্রধানমন্ত্রী

0
522

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ইতিমধ্যে ক্ষনগণনা উদ্বোধন করা হয়েছে। এখন মুজিববর্ষ পালন করার সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত।

তিনি বলেন, ৭৪ সালে জাতির পিতা রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য যে আইন করে দিয়েছে অর্থাৎ একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের সমস্ত কাঠামো নীতিমালা, বিধিমালা যা যা দরকার হতে পারে সবই করে দিয়ে গেছেন তিনি।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রোমের পার্কো দেই প্রিন্সিপি গ্র্যান্ড হোটেল অ্যান্ড স্পায় এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে এতো কাজ জাতির পিতা কিভাবে করে গেলেন তা আমার বুঝে আসে না। তার লক্ষ্য বাংলাদেশকে সুন্দরভাবে সাজানো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, মানুষ না খেয়ে কষ্ট পাবে না। প্রতিটি মানুষ সুন্দর জীবন পাবে, লেখাপড়া শিখবে। চিকিৎসা পাবে।

কিন্তু বঙ্গবন্ধু সে কাজ সম্পন্ন করে যেতে পারেননি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, একদিকে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে আর্থ সামাজিক উন্নয়নের পথে যখন যাত্রা শুরু করলেন। আমাদের দুর্ভাগ্য ৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হল।

গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রোমা ঢাকা রোম রুটে বিমান বাংলাদেশ পূনরায় চালুর দাবীর প্রশ্নের জাবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ১২টা বিমান রয়েছে আরও তিনটি খুব শীঘ্রই যোগ হবে। অনেক দেশের বিমান সমস্যা সমাধান হয়েছে। ইতালিতে বিমান চালুর ব্যাপারে দেশটির সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, অবৈধ ভাবে যারা সংবিধান লঙ্ঘন করেছে তাদের ভাগ্য আজ কঠিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,ঘুষ নেয়া ও দেওয়া দুইটাই অপরাধ । এই কালচার বিএনপি শুরু করে।

ইতালি আওয়ামী লীগ সভাপতি ইদ্রিস ফরাজীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইকবালের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রোমে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আব্দুস সোবাহান সিকদার, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতানা শরীফ প্রমুখ।

এছাড়াও জার্মান, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড,বেলজিয়াম,স্পেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতের আমন্ত্রণে ৪ দিনের সরকারি সফরে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ইতালি পৌঁছান।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে রোমের ফিয়ামিসিনো বিমানবন্দরে অবতরণ করে। মিনিস্টার প্লেনিপোটেনসিয়ারি অব ইটালিয়ান ফরেন মিনিস্ট্রি ক্রিস্টিয়ানো কোস্তাফাবি এবং ইতালিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান।

বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে মোটর শোভাযাত্রাসহকারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে পার্কো দেই প্রিন্সিপি গ্র্যান্ড হোটেল অ্যান্ড স্পায় নিয়ে যাওয়া হয়। ইতালির রাজধানীতে সফরকালে তিনি সেখানে অবস্থান করবেন।

প্রধানমন্ত্রী সফরকালে ৫ ফেব্রুয়ারি জিউসেপ কোঁতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। বৈঠকে সাংস্কৃতিক বিনিময়, রাজনৈতিক বিষয় এবং কূটনৈতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্পর্কিত তিনটি চুক্তি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে রোমের ভায়া ডেল’এন্টারটাইড এলাকায় বাংলাদেশ দূতাবাসের চ্যান্সরি ভবন উদ্বোধন করবেন। বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ কোঁতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন এবং ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন পালাজো চিগিতে আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন।

দুই শীর্ষ নেতা তাদের শীর্ষ বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সব বিষয়ের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েও আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পরে ইতালীয় ব্যবসায়িক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিগণ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আবাসকালীন হোটেলের সভাকক্ষে সাক্ষাৎ করবেন।

প্রধানমন্ত্রী এরপর একই হোটেলে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন। ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী এদিন দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে ট্রেনে রোম থেকে ইতালির মিলান শহরের উদ্দেশে যাত্রা করে স্থানীয় সময় বিকেল চারটায় সেখানে পৌঁছবেন। মিলান সফরে তিনি এক্সেলসিয়ার হোটেল গালিয়ায় অবস্থান করবেন।

প্রধানমন্ত্রী ৭ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে আমিরাত এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে মিলান মালপেন্সা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন।

শেখ হাসিনা ৮ ফেব্রুয়ারি দুবাই হয়ে বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবেন।