করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে চীনা কর্তৃপক্ষ নানাধরনের উদ্যোগ নিলেও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। চীনের ভেতরে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এই ভাইরাস নিয়ে অনেক উদ্বেগ ও প্রশ্ন রয়েছে অনেকের।
উহান প্রদেশের খবর শুনে অনেকে স্তম্ভিত । অনেকেরে মাঝে একটা চাপা কষ্ট বয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে এটা কোন শহর নয় কোন যুদ্ধ বিধ্বস্ত পরিত্যক্ত নগরী। ”কীভাবে দিন পার করছে উহানের মানুষ? সবাই যেন নিঃশব্দে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। উহানের কাছের একটি শহর থেকে বিবিসিকে ইমেলে লেখা এক শ্রোতার চিঠি। তাহলে হয়ত কিছুটা ধারণা পাওয়া যাবে কীভাবে দিন কাটাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা । লিখেছেন চায়না থ্রি গর্জেস ইউনিভার্সিটি থেকে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশানের প্রেসিডেন্ট শহিদুল ইসলাম:
”চীন থেকে দেশে ফিরতে চাই। আমরা এখনও ১৭২ জন বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী চীনের হুবেই প্রভিন্সের ইচ্যাং সিটিতে আটকে আছি৷ এটা উহান থেকে খুব কাছে হওয়ায় আমরা রেড জোনে আটকা পড়ে আছি। এখানকার অবস্থা খুব ভয়াবহ। ইণ্ডিয়া, মরক্কো, ইথিওপিয়া সহ অনেকগুলো দেশের ছাত্রছাত্রীদের ওদের সরকার নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে একটা নিউজ করুন দয়া করে। আজ ১১ দিন হল আমাদের ডরমেটরি সিল করা। খাবার পানি নেই । পর্যাপ্ত খাবার নেই৷ এই দিকে পরিস্থিতি প্রতিদিন ভয়াবহ হচ্ছে ৷ মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার একটা ভরসা দিয়েছেন।” উহানে দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করা শামিমা সুলতানা বিবিসিকে বলেছিলেন, “বাংলাদেশে ফেরার সুযোগ থাকলে এক মুহূর্তও এখানে থাকতাম না”।
উহান শহরটিকে কার্যত এখন বন্ধ করে রেখেছে চীনের কর্তৃপক্ষ। সেখান থেকে কাউকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না। কাউকে ঢুকতেও দেয়া হচ্ছে না। দেশটির সরকার সেখানকার সব ধরণের গণপরিবহনে চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় এক রকম ঘরবন্দি অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। এই উহানের একটি প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা রয়েছেন, যারা এখন সেখানে অবস্থান করছেন। চীনে বসবাসরত প্রায় তিন হাজার বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে প্রায় তিনশ জনের বসবাস উহান এবং এর আশেপাশের শহরগুলোয়।