বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে পারবে।

0
466

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন  (ইউজিসি),অনলাইনে ক্লাসে উৎসাহ দিয়ে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে  একতরফাভাবে এ শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত দেওয়ায় ক্লাস চালু রাখা হলেও সব ধরণের পরীক্ষা ও মূল্যায়ন, ভর্তির কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছিল। এবার অনলাইনে মূল্যায়ন ও ভর্তির প্রশ্নে নীতিগত একমত হয়েছেন উচ্চ শিক্ষার নীতি নির্ধারকরা। 

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষা-মূল্যায়ন ছাড়া শুধু অনলাইনে ক্লাস নিলে সেশনজটের আশঙ্কা থেকে যায়। এ জন্য বর্তমান পরিস্থিতিতে আলোচনা করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ জানিয়ে আসছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি

বৃহস্পতিবার ৩০ এপ্রিল ২০২০, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি, বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির (এপিইউবি) সভাপতি এবং সরকারি ও  বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এক কর্তৃপক্ষের এক যৌথ অনলাইন সভায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। তবে কী প্রক্রিয়ায় কাজটি হবে, সে বিষয়ে শিগগির একটি নির্দেশনা জারি করবে ইউজিসি। এ ছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শেষে একাডেমিক কাউন্সিলেরের মাধ্যমে ছুটি কমানো, সাপ্তাহিক ছুটিতে ক্লাস নেওয়াসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে সেশনজট নিরসনের ব্যবস্থা নেবে। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এ সভায় অংশ নেন।

বিকাল ৪টায় এই অনলাইন সভায় শিক্ষামন্ত্রী এবং উপমন্ত্রী ছাড়াও যার যার বাসা থেকে যুক্ত হন ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান তামারা আবেদ, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল। এছাড়া এতে ইউজিসির তিন সদস্য, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ভিসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র পরিচালকও এতে যুক্ত হন বলে জানা গেছে।

আজকের বৈঠকে অংশ নেওয়া ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, তখন ধারণা করা হয়েছিল করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এত দীর্ঘ হবে না। তার পরও অনলাইনে ক্লাস করাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতেও পারে। এতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বেশি সমস্যা হবে। এ জন্য অনলাইনের প্রয়োজনীয়তার কথা সবাই অনুভব করছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে পারবে। কীভাবে একাজটি করা হবে সে বিষয়ে শিগগির ইউজিসি একটি নির্দেশনা জারি করবে আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ ধরনের সেশনজটের পরিস্থিতি অতীতে মোকাবিলা করেছে। বিদ্যমান পরিস্থিতি শেষে ছুটি কমিয়ে, সাপ্তাহিক ছুটিতে ক্লাস নিয়ে সেশনজট নিরসনের উদ্যোগ নিতে পারবে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চলতি সেমিস্টার নিয়েই বেশি সমস্যায় পড়েছে। বৈঠকে উপস্থিতি একজন জানান, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আলোচনার শেষ দিকে এসে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোতেও অনলাইনে পড়াশোনার বিকল্প ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেন শিক্ষামন্ত্রী।

বর্তমানে সারা দেশে ৪৬টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১০০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চলমান । করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেশনজটের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, করোনা পরিস্থিতি এ রকমভাবে অব্যাহত থাকলে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে পারে। ফলে সেশনজটের আশঙ্কা আরও বাড়ছে।