ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান মারা গেছেন

0
466

বাংলাদেশের অন্যতম বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান ১ জুলাই, বুধবার সকাল ১১টায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের নিজ পৈত্রিক নিবাসে ঘুমন্ত অবস্থায় বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছেন । তিনি দুই বছর ধরেই অসুস্থ ছিলেন বলে জানা গেছে। আর বেশিরভাগ সময়ই তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাড়িতে থাকতেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।

তিনি এমন দিনে মারা গেলেন, যেদিন তার নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারাজ হোসেন ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই তারিখে ঢাকার হোলি আর্টিজান রেস্তোরায় জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহত হন।

বাবার পাটকলে কর্মজীবন শুরু করে পরে তিনি ব্যবসা জীবন শুরু করেন ১৯৭২ সাল । লতিফুর রহমান প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকার অন্যতম মালিক। এছাড়া, আন্তর্জাতিক ফুড চেইন পিৎজা হাট ও কেএফসি, পেপসি এবং ফিলিপসের বাংলাদেশের ফ্রাঞ্চাইজের মালিক ছিলেন তিনি। এছাড়া তিনি ওষুধ, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক পণ্য, চা শিল্প, নেসলে বাংলাদেশ, হোলসিম বাংলাদেশ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিমাসহ একাধিক কোম্পানির প্রধান ছিলেন।

তিনি ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্স বাংলাদেশের (আইসিসি) সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি মেট্টোপলিটন চেম্বার এন্ড কমার্সের কয়েক মেয়াদে সভাপতি ছিলেন। তিনি ২০১২ সালে মর্যদাপূর্ণ বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন।

মৃত্যুর সময়ে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন। তার আরেক মেয়ে শাজনীন রহমান ১৯৯৮ সালে গুলশানের বাড়িতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন।

লতিফুর রহমানের জন্ম জলপাইগুড়িতে, ১৯৪৫ সালের ২৮শে অগাস্ট। সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে পড়াশোনা শুরুর ১৯৫৬ সালে শিলংয়ের সেন্ট এডমন্ডস স্কুলে পড়াশোনা করতে যান। তারপর কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াশোনা করেন। ১৯৬৫ সালে ঢাকায় ফিরে আসেন লতিফুর রহমান। তিনি ঢাকায় গেণ্ডারিয়ায় থাকতেন। ১৯৬৬ সালে ডব্লিউ রহমান জুট মিলে শিক্ষানবীশ হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। দেড় বছর পর সেখানেই নির্বাহী হিসাবে যোগ দেন।

লতিফুর রহমানের দাদা খান বাহাদুর ওয়ালিউর রহমান ছোট বেলায় চৌদ্দগ্রাম থেকে চলে গিয়েছিলেন আসামের জলপাইগুড়িতে। ১৮৮৫ সালে সেখানে জমি কিনে তিনি চা-বাগান শুরু করেন। লতিফুরের বাবা মুজিবুর রহমান পরে আসামের তেজপুরেও চা-বাগান করেন।

পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, লতিফুর রহমানের মরদেহ ঢাকায় আনা হয়। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে গুলশানের আজাদ মসজিদে বাদ এশা তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা পর লতিফুর রহমানকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।