এশিয়া-প্যাসিফিকে মোবাইল প্রযুক্তিতে কে কত এগিয়ে?

0
647
টেলিকম অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন জিএসএমএ৷ সম্প্রতি তারা দ্য মোবাইল ইকোনমি, এশিয়া প্যাসিফিক ২০২০ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ জিএসএমএ-এর হিসাবে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর ৬৬ ভাগ বা ২৮০ কোটি মানুষের মোবাইল সংযোগ রয়েছে, যার মধ্যে ২০০ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন৷ ২০২৫ সাল নাগাদ মোবাইল সংযোগ ৩০০ কোটি আর ইন্টারনেট ব্যবহার ২৭০ কোটিতে পৌঁছাবে৷
গ্রাহক বিবেচনায় বিশ্বে মোবাইল প্রযুক্তির অন্যতম বাজার এশিয়া প্রশান্ত মহাসগরীয় অঞ্চল৷ ২৮০ কোটি ইউনিক বা একক মোবাইল সংযোগ রয়েছে এখানকার মানুষের৷ এই দেশগুলোর মধ্যে প্রযুক্তি ব্যবহারে কার অবস্থান কেমন ৷
বাংলাদেশ: মোবাইলের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য চাই স্মার্টফোন৷ জিএসএমএ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী দক্ষিণ কোরিয়ার ৮৫ ভাগ, সিঙ্গাপুরের ৮৭ ভাগ, মালয়শিয়ার ৮৩ ভাগ, অস্ট্রেলিয়ার ৮২ ভাগ, ইন্দোনেশিয়ার ৭৪ ভাগ, জাপানের ৬৮ ভাগ গ্রাহকের স্মার্টফোন রয়েছে৷ অন্যদিকে ভারতের ৬৭ ভাগ, পাকিস্তানের ৪৯ ভাগ আর বাংলাদেশের মাত্র ৪০ ভাগ গ্রাহক স্মার্টফোন ব্যবহারকারী৷
২০১৯ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের ৫৪ ভাগের মোবাইল সংযোগ আছে৷ তাদের ৫১ ভাগই টুজি ব্যবহারকারী৷ থ্রিজি বা তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আছেন ৪০ ভাগ৷ ২০১৮ সালে চালু হলেও ফোরজি ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন মাত্র ১০ ভাগ৷ জিএসএমএ অবশ্য বলছে ২০২৫ সালে এটি ৪৬ শতাংশে পৌঁছাবে৷ তখন অত্যাধুনিক ফাইভজি প্রযুক্তি ব্যবহার করবেন ছয়ভাগ ব্যবহারকারী৷ তারপরও ৩০ ভাগ থ্রিজিতে আর ১৮ ভাগ থেকে যাবেন টুজিতেই৷
ভারত: ভারতে মোবাইল সংযোগ আছে ৫২ শতাংশ মানুষের৷ তাদের ৫৬ ভাগই ফোরজি ব্যবহারকারী৷ থ্রিজিতে আছেন ১১ ভাগ আর টুজিতে ৩৩ ভাগ৷ ২০২৫ সালে দেশটির ৮২ শতাংশই চলে আসবেন ফোরজির আওতায়৷ সাত শতাংশ ব্যবহার করবেন ফাইভজি৷
পাকিস্তান: দেশটির ৫৪ ভাগই দ্বিতীয় প্রজন্মের নেটওয়ার্কে আটকে আছেন৷ মাত্র ২০ শতাংশ থ্রিজি ব্যবহার করলেও ২৬ ভাগ অবশ্য ফোরজির আওতায় চলে এসেছেন৷ ২০২৫ সালে সেখানে ফোরজি ব্যবহার করবেন ৫৯ ভাগ গ্রাহক৷ ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশটির মোট জনসংখ্যার ৪১ ভাগ মোবাইল সংযোগের মালিক যা ২০২৫ সালে বেড়ে ৪৮ ভাগ হবে৷
মালয়শিয়া: মালয়েশিয়াতে বেশিরভাগ মানুষই ফোরজি ব্যবহার করছেন৷ ২০১৯ সালের ৬৯ শতাংশ থেকে তা ৭৯ শতাংশ হবে ২০২৫ সালে৷ আর ২০ ভাগ ব্যবহার করবেন ফাইভজি৷ এশিয়ার উদীয়মান এই অর্থনীতির মোট জনসংখ্যার ৮০ ভাগই মোবাইল সংযোগের মালিক৷
সিঙ্গাপুর: সিঙ্গাপুরের জনসংখ্যার ৮৮ ভাগই মোবাইল গ্রাহক৷ তাদের মধ্যে ৭৬ শতাংশ ফোরজি, ২৩ শতাংশ থ্রিজি ব্যবহারকারী৷ ২০২৫ সালে ফাইভজির আওতাতেই চলে আসবেন ৩৪ ভাগ গ্রাহক৷ আর বাকিরা থাকবেন ফোরজি নেটওয়ার্কে৷
ইন্দোনেশিয়া: ইন্দোনেশিয়াতে গ্রাহকদের বেশিরভাগ বা ৫৫ শতাংশই ফোরজির আওতায় চলে এসেছেন৷ বাকি ৪৫ ভাগের ৩৩ শতাংশই থ্রিজি ব্যবহারকারী৷ ২০২৫ সালে দেশটির ৮১ ভাগ মানুষ ফোরজি ব্যবহার করবে৷ জনসংখ্যার হিসাবে মোট মোবাইল গ্রাহক ৬৫ ভাগ থেকে বেড়ে হবে ৬৮ ভাগ৷
জাপান: এশিয়ার উন্নত এই দেশটিতে ৮৮ ভাগই মোবাইল ব্যবহারকারীই ফোরজি নেটওয়ার্কের সুবিধা পাচ্ছেন৷ ২০১৯ সাল পর্যন্ত কেউ ফাইভজির আওতায় না আসলেও ২০২৫ সালে তা ৪৭ শতাংশে হবে৷ ৫২ ভাগ থাকবেন ফোরজিতে৷ দেশটির মোট জনসংখ্যার ৮৭ ভাগেরই নিজস্ব মোবাইল সংযোগ আছে৷
দক্ষিণ কোরিয়া: বিশ্বে মোবাইল প্রযুক্তিতে নেতৃত্বদানকারী দেশগুলোর একটি দক্ষিণ কোরিয়া৷ এরিমধ্যে তাদের মোবাইল গ্রাহকদের আটভাগ ফাইভজির আওতায় চলে এসেছেন, যা আগামী পাঁচ বছরে ৬৭ শতাংশে উন্নীত হবে৷ এখন ৮২ ভাগ ফোরজিতে থাকলেও তা কমে ৩২ ভাগ হবে সেসময়ে৷
অস্ট্রেলিয়া: দেশটির ৮৩ ভাগই ফোরজি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছেন৷ ১৬ ভাগ থ্রিজি আর একভাগ এমনকি ফাইভজির আওতায়ও চলে এসেছেন৷ যা ২০২৫ সালে ৫৪ ভাগে পৌঁছাবে৷ বাকিটা থাকবে ফোরজির দখলে৷

 

dw