কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার দাম কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে।

0
667

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ, কাঁচা চামড়া সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাত করণ, মিডিয়ায়

প্রচার এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় পর্যালোচনা সংক্রান্ত এক বৈঠক রোববার ২৬ জুলাই অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয় । বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীনের সভাপতিত্বে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, চামড়া খাত শিল্পের উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, রফতানিকারক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন ।

এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহার জন্য নির্ধারিত এ দর গত বছরের চেয়ে বেশ কম। এবছর ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার মূল্য প্রতি বর্গফুট ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ২৮-৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সারা দেশে খাসির চামড়া ১৩-১৫ টাকা আর বকরির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। । বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল এই বৈঠকে কাঁচা চামড়ার দাম কমিয়ে এ মূল্য নির্ধারণ ঘোষণা করেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এছাড়া করোনার কারণে বিশ্ববাজার সঙ্কুচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সবকিছু বিবেচনায় গতবারের চেয়ে কম দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ থেকে ২৯ শতাংশ।

চামড়াজাত পণ্যের দাম ক্রমান্বয়ে বাড়ছে অথচ চামড়ার দাম কমছে কেন এমন প্রশ্নে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এবার করোনার কারণে বিশ্বজুড়ে মন্দা। তাই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের কথা চিন্তা করে এবার দাম কমানো হয়েছে। তাছাড়া ট্যানারি শিল্পটা আমরা এখনও আপডেট করতে পারিনি এটাও আমাদের একটা দুর্বলতা।

বৈঠকে ট্যানারি মালিকদের পক্ষে থেকে চামড়া কেনার জন্য এখনও ঋণ না পাওয়ার বিষয়টি উঠে আসে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যেই তারা বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ বিষয়টি খুব দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।

গরিব ও এতিমদের হক চামড়ার দাম নিয়ে গত বছরের অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। ৩১ বছরের মধ্যে গতবার কোরবানির ঈদে কাঁচা চামড়ার দরে সবচেয়ে বেশি বিপর্যয় নেমে আসে। দাম না পেয়ে অনেকেই ক্ষোভে চামড়া নদীতেও ফেলে দেন।

গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সম্পদ কাঁচা চামড়ার গুণগতমান বজায় রাখা একান্ত প্রয়োজন। সভায় এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশের সব প্রচার মাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করা হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, চামড়ার নির্ধারিত মূল্য নিশ্চিতকরণ, যথাযথ প্রক্রিয়ায় চামড়া সংগ্রহ ও যথাসময়ে লবণ লাগানো নিশ্চিত করতে হবে। ঈদের দিন থেকে দেশব্যাপী কঠোরভাবে বিষয়গুলো মনিটরিং করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গঠিত মনিটরিং টিম। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রয়োজনে এবার কাঁচা চামড়া ও ওয়েস্ট ব্লু চামড়া রপ্তানি করা হবে।

‘এবছর চামড়া যাতে নষ্ট না হয় এবং নির্ধারিত মূল্য নিশ্চিত করতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে এবং কঠোরভাবে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, নির্ধারিত মূল্যে ক্রয়-বিক্রয়সহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা তদারকির জন্য সব বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ‘

মন্ত্রী বলেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর জেলা পর্যায়ে মনিটরিং করবে। জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল, বেতার, কমিউনিটি রেডিওতে প্রচারণা চালানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ফেসবুক-ইউটিউবে ১০ লাখ মানুষের কাছে ভিডিওবার্তা পাঠানো ও পর্যাপ্ত হ্যান্ডবিল বিতরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।