যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সংখ্যা বিপুলভাবে কমানোর পরিকল্পনা করছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হেগেল। খবর বিবিসি’র।
হেগেলের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে প্রায় ৫০ হাজার সৈন্য কমানো হবে।
ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে দায়িত্বে সক্রিয় সদস্যের সংখ্যা কমে দাঁড়ারে ৪ লাখ ৪০ হাজার থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজারের মধ্যে। বর্তমানে দায়িত্বে সক্রিয় সদস্যের সংখ্যা ৫ লাখ ২০ হাজার।
যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সংকটের কারণেই মূলত এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেনা সংখ্যা কমানোর পাশাপাশি স্নায়ুযুদ্ধের সময়কার বিমান বহর– দা ইউ-২ গোয়েন্দা বিমান এবং এ-১০ আক্রমণ বিমানও অবসরে পাঠানো হবে।
স্নায়ুযুদ্ধের সময়কালের চেয়েও এখন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাজেট বেশি।
সোমবার চাক হেগেল জানান, দুটি ব্যয়বহুল যুদ্ধের পর (ইরাক ও আফগানিস্তান) যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সংখ্যা কমানোর জন্য এখন চাপ বাড়ছে।
তিনি বলেন, ‘এটা সময়ের বাবস্তবতা। এই বাজেটে আমাদের আর্থিক চ্যালেঞ্জের মাত্রাকে স্বীকৃতি দেয়া হবে।’
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের শেষে মার্কিন সৈন্যরা আফগানিস্তান থেকে চলে এলে সৈন্য সংখ্যা কমে দাঁড়াবে ৪ লাখ ৯০ হাজারে।
তিনি বলেন, এখন যুক্তরাষ্ট্র কোনো দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে জড়িত না থাকায় এতো বিপুল সংখ্যক সৈন্যের প্রয়োজনীয়তা নেই।
হেগেল জানান, ২০১৭ সালের মধ্যে দেশের অভ্যন্তরের কিছু সামরিক ঘাঁটিও বন্ধ করে দেয়ার সুপারিশ করবেন তিনি। তবে এর আগে মার্কিন কংগ্রেস এ ধরনের প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে।
পেন্টাগনের প্রধান কর্তা জানান, সামরিক ব্যয় কমানোর জন্য তিনি সৈন্যদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদি যেমন আবাসন ভাতা ও বেতন বৃদ্ধির হার কমানোর পরিকল্পনা করছেন।
হেগেলের প্রস্তাব পাস হলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রে দায়িত্বে সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা সবচেয়ে কমে নেমে আসবে। তখন সৈন্য সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৬৭ হাজার ৭৬৭ জন। ১৯৪১ সালে জাপানের পার্ল হার্বারে আক্রমণের মাধ্যমে ওই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার পেন্টাগন জানায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীতে সক্রিয সৈন্যের সংখ্যা ছিল ৮২ লাখ।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের (নাইন ইলেভেন) এক বছর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৮২ হাজার। ২০১০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ লাখ ৬৬ হাজারে।