উগান্ডার প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি দেশটির সমকাম বিরোধী একটি বিলে স্বাক্ষর করেছেন। এতে সমকামীদের কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। খবর: বিবিসি’র।
সমকামীদের সম্পর্কে তথ্যদান থেকে যারা বিরত থাকবে তাদেরও এই আইনের আওতায় শাস্তি পেতে হবে।
এই বিলে স্বাক্ষর সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট মুসেভেনির একজন সরকারি মুখপাত্র জানান, প্রেসিডেন্ট ‘পশ্চিমা শক্তির বিপক্ষে দাঁড়িয়ে’ উগান্ডার স্বাধীনতা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করতে চেয়েছেন।
তবে এই বিলের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা উগান্ডাকে সতর্ক করে বলেছেন এটা একটি অনগ্রসর সিদ্ধান্ত হতে পারে।
এর আগে প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি যুক্তরাষ্ট্রের বৈজ্ঞানিক পরামর্শের আগ পর্যন্ত বিলটি স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু দলীয় নেতৃবৃন্দ এবং পার্লামেন্ট সদস্যদের চাপে এই বিলে তাকে স্বাক্ষর করতে হয়েছে।
উগান্ডাতে যে কোনো ধরনের সমকামী কর্মকাণ্ড অবৈধ। আর নতুন আইনটির মাধ্যমে এখন কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হলো। নতুন আইন অনুযায়ী প্রথমবারের মত অপরাধীরা ১৪ বছরের কারাভোগ করবেন। আর গুরুতর পর্যায়ের সমকামীরা যাবজ্জীবন কারাভোগও করতে পারেন।
সমকামীদের সম্পর্কে না জানানোকেও একটি অপরাধ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। মোদ্দা কথা হলো সমকামীদের প্রকাশ্যে জীবনধারণ করা অনেকটা অসম্ভব হয়ে গেল এই আইন পাসের মাধ্যমে।
এমনকি দেশে অবস্থিত কোনো দেশি-বিদেশি সংস্থা কিংবা এনজিও কর্তৃক সমকামীদের সমর্থন, স্বীকৃতি, আশ্রয় বা যে কোনো ধরনের সহায়তাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
এদিকে, আদালতে এটাকে চ্যালেঞ্জ করার ঘোষণা দিয়েছে সমকামীদের অধিকার সমর্থক মানবাধিকার কর্মীরা।
এই বিলটিতে প্রথম দিকে কিছু সমকামী কর্মকাণ্ডের জন্য মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাধার মুখে এটাকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।
এ বিলটি এতই বিতর্কিত ছিল যে, এই বিলে স্বাক্ষর করার মুহূর্তে সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। একটি সংবাদ সম্মেলনেই প্রেসিডেন্ট এ বিলটিতে স্বাক্ষর করেন।
বিবিসি’র উগান্ডা প্রতিনিধি ক্যাথরিন বিয়ারুহাঙ্গা বলেন, প্রেসিডেন্টের প্রকাশ্যে কোনো বিলে স্বাক্ষর করার ঘটনা বিরল।
বিলটির উত্থাপনকারী সংসদ সদস্য ডেভিড বাহাতি জোর দিয়ে বলেন, সমকামিতা এমন একটি আচরণ যেটা শেখা যায় আবার বিরত থাকাও যায়।