নববর্ষ, সংস্কৃতি ও আমাদের জাতীয় চেতনা- ড. মোহাম্মদ সফিউল্লাহ্ মীর

0
1099

বাংলা নববর্ষ বাংলাদেশের একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। বৈশাখের পহেলা তারিখ এদেশে নববর্ষ উদ্যাপন করে থাকে।পহেলা বৈশাখে এক সময় গ্রামে-গঞ্জের আনাচে-কানাচে সর্বত্রই মেলা বসত। মেলায় কামার, কুমার, জেলে, ছুতার সবাই যার যার পণ্যের পসরা সাজানোর রীতি প্রচলিত ছিল। সেখানে পাওয়া যেতো খাদ্যদ্রব্য ও কৃষির বিভিন্ন উপকরণসহ নানা রঙের ঘুড়ি, বাঁশের বিভিন্ন প্রকার বাঁশি, বসার পিঁড়ি, নিত্য ব্যবহৃত মৃৎশিল্পের তৈজসপত্র, দা, কুড়াল, খন্তা, জলচৌকি,কুলা, ডালাসহ বাঁশ ও বেতের বিবিধ সামগ্রী; মাটির খেলনা, জাতীয় পাখি, গরু, মাছ, নকশা ও রং করা পুতুল ইত্যাদি। থাকতো রসগোল্লা, জিলাপী, বাতাসা, কদমা, চিড়া-মুড়ি, খই, চিনির তৈরি বিভিন্ন প্রকার খাবার। দেশীয় পণ্যের বিরাট বাজার হিসেবে এই মেলা জাতীয় অর্থনীতিতেও অসাধারণ অবদান রাখতো। এছাড়া মেলায় ঘোড়দৌড়, ষাঁড়ের লড়াই, চরক গাছ ও বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করা হতো।এসব মেলার আশপাশের বাড়িঘরে ঈদের দিনের মতো মেহমানের আনাগোনা ও রান্না-বান্নার আয়োজন চলতো। নববর্ষ উপলক্ষ্যে গ্রামে গ্রামে হা-ডু-ডু, কাবাডি ও দাড়িয়াবান্ধা খেলা এবং সন্ধ্যায় বারমাসী, বাউল ও জারী-সারি গানের আসর বসতো। হাটে বাজারের দোকানদার ও মহাজনেরা সারা বছরের লাভ লোকসানের হিসাব মিলিয়ে শুভ নববর্ষের হালখাতার আয়োজন করতো। ছাপানো কার্ডে হালখাতার নিমন্ত্রণপত্র দেয়া হতো। গ্রাহক বা খরিদ্দারগণ পুরাতন সমুদয় বকেয়া বা আংশিক বকেয়া পরিশোধ করতো। লাল মলাটের খাতায় নতুন হিসাব লেখা হতো। রসগোল্লা, নিমকি,দই, জিলাপি, পায়েস ইত্যাদি খাওয়ানোর রেওয়াজ ছিল হালখাতা অনুষ্ঠানে।

বর্তমানে সংস্কৃতির গ্রহণ-বর্জনের ধারাবাহিকতায় উৎসব-উদ্যাপনসমূহ ভিন্ন দিকে বাক নিয়েছে;উৎসবের ধরনও বদলেছে অনেক। আবার কিছু কিছু অনুষ্ঠানের রেওয়াজও কমে গেছে অনেকাংশে। চিত্তবিনোদনের মাধ্যমগুলো আকাশ সংস্কৃতির দখলে চলে যাওয়ায় এবং মানুষের জীবন-যাত্রায় আধুুনিক প্রযুক্তি প্রাধান্যের কারণে হয়তো নববর্ষ উদ্যাপনের ধরনেও পরিবর্তন এসেছে।নববর্ষের ঐতিহ্যকে সামনে রেখে গ্রামের মেলার স্বাদ নগরবাসীদের মধ্যেও সঞ্চারিত হচ্ছে। তাই এখন শহরেও বৈশাখী মেলা বসে। বাংলা নববর্ষে গ্রামের মেলার মতো নগরে এতো কিছু না হলেও হরেক রকম মাটির খেলনা ও কুটির শিল্প সামগ্রী পাওয়া যায়। গান-বাজনার দোলা লাগে নাগরিক জীবনে, নাগরদোলা ও মঙ্গল শোভাযাত্রায় মেতে ওঠে নাগরিক। এসময় নগরীর আধুনিক রেস্টোরেন্টেগুলোতেও পান্তা ইলিশের আয়োজন চলে; মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো নববর্ষ প্যাকেজ নামে বিশেষ অফার দিয়ে থাকে। পোষাক উৎপাদন-বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নববর্ষের শাড়ি, পাঞ্জারী, ফতুয়াসহ বৈচিত্রময় পোষাকের যোগান দিয়ে থাকে। শিশুপার্কও উদ্যানগুলোতে অতিরিক্ত মানুষের ভিড় পরিলক্ষিত হয়। পত্রিকায় ছাপানো হয় বিশেষ ফিচার। বিনোদন মাধ্যমগুলোও বিশেষ আয়োজনের ব্যবস্থা করে থাকে তখন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুমহল পারস্পরিক নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়ে আগ্রহী হয়ে ওঠে।অপরদিকে দেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলো নববর্ষকে কেন্দ্র করে তিনদিনব্যাপী বৈসাবী উৎসব পালন করে থাকে; তারা নিমন্ত্রণ করে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষকে। অতিথি আপ্যায়ন করে থাকে মিষ্টি, সন্দেশ, লাড্ডু, হরেক রকম কোমল পানীয় ও তেত্রিশ প্রকার সবজি মিশ্রণে রান্না করা পাচন দিয়ে।বাংলা নববর্ষের উৎসব বাংলাদেশের সকল ধর্মের-বর্ণের-শ্রেণির মানুষের জাতীয় উৎসব। এধরনের উৎসব সংস্কৃতিগুলো বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করেছে।

নববর্ষ উদযাপনের শুরুটা অবশ্যকরেছে রোমানরা, খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন জাতিতে জাতিতে নববর্ষের উৎসব প্রচলন রয়েছে। সংস্কৃতির ভিন্নতার কারণে বিভিন্ন দেশে নববর্ষের উৎসব উদ্যাপনে রয়েছে রকমফের। তবে বঙ্গাঞ্চলে আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন শুরু হয়। এসময় চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে প্রজারা প্রত্যেকে সকল খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে হতো। ৯৬৩ হিজরীতে (১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দ) ভারতবর্ষে সম্রাট আকবরের উপদেষ্টা আমীর ফতেউল্লাহ সিরাজী হিজরী সনের পরিবর্তে সৌরবর্ষের হিসাব সংযোজন করে বাংলা সনের উদ্ভাবন করেছিলেন। তখন থেকে বৈশাখ মাসকে বাংলা সনের প্রথম মাস হিসেবে ধরা হয়। বর্তমান বাংলাদেশের শিক্ষিত জনগণের কাছে খ্রিষ্টীয় বর্ষপঞ্জি বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সরকারি অর্থ বছর জুলাই থেকে জুন হিসাব করা হয়, তবে কৃষি কাজে নিয়োজিত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে বীজ বুনন ও ফসল কর্তনের ক্ষেত্রে বাংলা সন গণনার গুরুত্ব আজও বহন করে।গ্রামের মানুষের বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠান বিশেষ করে বিয়ে-শাদি, খৎনা, কুলখানিসহ দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সবকিছুই বাংলা তারিখে নির্ধারিত হয়। এখনও পর্যন্ত থানা ও জেলা শহর এবং গ্রামের হাট-বাজারে ব্যবসা-বাণিজ্য, গুদামঘর ভাড়ার হিসাব করা হয় বৈশাখ হতে চৈত্র বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী।

আধুনিককালে বাংলায় নববর্ষ উদ্যাপনের তথ্য পাওয়া যায় ১৯১৭ সালে। প্রথম মহাযুদ্ধে বৃটিশদের বিজয় কামনা করে সে বছর পহেলা বৈশাখে হোম কীর্তন ও পূজার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ১৯৩৮ সালেও এরূপ ব্যবস্থা করা হয়। ১৯৬৭ সাল থেকে ছায়ানট পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর শোষণ-নিপিড়ন ও সাংস্কৃতিক সন্ত্রাসের প্রতিবাদে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সূচনা করে। ১৯৮৯ সালে চারুকলা ইন্সটিটিউট থেকে প্রথম মঙ্গল শোভা যাত্রা শুরু করা হয়। ধীরে ধীরে যোগ হয়েছে পান্তা ইলিশের বিষয়টিও। জাতি হিসেবে আমরা কতটুকু অগ্রসর হয়েছি; বিশ্বসভ্যতায় কতটুকু অংশগ্রহণ করতে পেরেছি তার প্রমাণ একমাত্র সাংস্কৃতিক অর্জনই বহন করে থাকে। অর্থাৎ, আমাদের যতটুকু সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে তা-ই বিশ্বসভ্যতায় আমাদের অংশ বলে বিবেচিত। সংস্কৃতিই মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে এবং সংস্কৃতি বোধের কারণে কোনো জনসমাজ অন্য যেকোনো জনসমাজ থেকে নিজেকে পৃথক ভাবতে শিখে, জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হতে সহায়তা করে। বিশ্বের অপরাপর মানুষের ন্যায় বাংলাদেশের মানুষেরও সমৃদ্ধশালী নিজস্ব সংস্কৃতি আছে। তাই বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বের অপরাপর মানবজাতি থেকে নিজেদেরকে আলাদা ভাবতে শিখেছে। প্রাচীনকাল থেকে রূপান্তরের ধারাবাহিকতায় পারস্পরিক গ্রহণ-বর্জনের মাধ্যমে নানা ধর্ম-বর্ণ, গোত্র-সম্প্রদায় ও নৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতির মিশ্রণে এদেশের মানুষের নিজস্ব সংস্কৃতি পরিপূর্ণতা পেয়েছে। তৈরি হয়েছে বর্তমান বাংলাদেশের জাতীয় সংস্কৃতি।পহেলা বৈশাখে নববর্ষ উদ্যাপন বাংলাদেশের মানুষের জাতীয় সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ; তা আমাদের রাষ্ট্রীয় সমাজের অমূল্য সম্পদ।

বাঁচার তাগিদে কিংবা একে অপরের সহযোগিতার প্রয়োজনে সৃষ্টির শুরু থেকে মানুষ সমাজে বসবাস করে আসছে।একটি সমাজে বসবাস করা মানুষের চিন্তা-চেতনা, আচার-অনুষ্ঠান, পোষাক-পরিচ্ছদ, মূল্যবোধ, জীবন দর্শন ও শিল্পকলা অপর সমাজে বসবাসকারী মানুষ থেকে বৈচিত্র্যপূর্ণ ও স্বাতন্ত্র্য হয়ে থাকে, ফলে প্রত্যেক সমাজে বসবাসকারী মানুষের জীবন যাপন প্রণালীতেও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যফুটে ওঠে। জাতি জাতিতে এরূপ স্বাতন্ত্র্য জীবন প্রণালীকে বলা হয় জীবনধারা বা সংস্কৃতি (ঈঁষঃঁৎব)। সংস্কৃতিই মানুষকে মানুষ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়।এ সম্পর্কে ইংরেজ নৃ-বিজ্ঞানী ই.বি. টেইলর বলেছেন, “সংস্কৃতি হচ্ছে সমাজে বসবাসরত মানুষের অর্জিত জ্ঞান, বিশ্বাস, কলা, নীতি, নিয়ম, সংস্কার ও অন্যান্য যেকোনো বিষয়ে দক্ষতার সমাবেশ, যা মানুষ সমাজের সদস্য হিসেবে অর্জন করে।” এক কথায় সংস্কৃতি হলো মানুষের জীবন মান, জীবন চেতনা, জীবনের সামগ্রিক ফলিত রূপ। বিভিন্ন সমাজ বা রাষ্ট্রের মানুষের জীবন যাত্রার মান, পরিবেশ, প্রতিবেশ, ইতিহাস-ঐতিহ্যগত ভিন্নতার কারণে তাঁদের মানসিক বৈশিষ্ট্য ও রুচিবোধের মধ্যে পার্থক্য দেখা যায়।আর মানসিক বৈশিষ্ট্য ও রুচিবোধের মধ্যে পার্থক্যের ফলে একেক সমাজ বা রাষ্ট্রের মানুষের সংস্কৃতি ও তাঁর সাংস্কৃতিক চেতনাবোধ একেক রকম হয়ে থাকে। আর যখন একটি জনসমাজ মানসিকভাবে নিজেদেরকে অন্য যেকোনো জনসমাজ থেকে পৃথক বলে মনে করে তখনই উক্ত জনসমাজ তার শান্তি, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের জন্য একটা রাষ্ট্রের প্রয়োজন বোধ করে। আর নিজেকে অন্য জনসমাজ থেকে পৃথক মনে করার প্রবণতাটা তৈরি হয়যে মূল অনুভূতিগুলো থেকে, তার অন্যতম উপাদান হলো সাংস্কৃতিক চেতনাবোধ। বাংলাদেশি জনগণের জীবনযাত্রা, জীবনমান, চিন্তাধারা, অভ্যাস, রীতি-নীতি, ক্রিয়াকলাপ, আচার-প্রথা ইত্যাদির মধ্যেই তাঁদের সাংস্কৃতিক পরিচয় খুঁজে পাওয়া যায়। বাংলাদেশি জনগণ নিজস্ব ভূ-খ-কে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সাংস্কৃতিক চেতনাবোধে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলো। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন সাংস্কৃতিক কর্মীদের দ্বারা একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন হিসেবে গড়ে ওঠে।ঔপনিবেশিক মনোবৃত্তি সম্পন্ন পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক শাসক গোষ্ঠী প্রথমে বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতির উপর আঘাত করে। পাকিস্তানি শাসক-শোষক গোষ্ঠী যখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানি জনগোষ্ঠীর সর্ব প্রকার অধিকার হরণে উন্মত্ত, তখন সেই হায়েনার গ্রাস থেকে বাঁচার জন্য,নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য বাঙালিরা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির ঐতিহ্য রবীন্দ্র-নজরুল সঙ্গীত, লোক সঙ্গীত, নববর্ষ উৎসব, পৌষ পার্বণ, নবান্ন সবকিছুকে ধারণ করে আত্মরক্ষার বর্ম তৈরি করে। ভাষা আন্দোলকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে অসংখ্য গান ও কবিতা; লিখিত হয়েছে গল্প-উপন্যাস। প্রচ- আত্মরক্ষার তাগিদ থেকে তখন বাঙালি জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতির চেতনা ধীরে ধীরে রাজনৈতিক চেতনায় রূপ লাভ করে;সাংস্কৃতিক চেতনা বাংলাদেশের মানুষের জাতীয় চেতনার পরিপূরক হয়ে ওঠে। সাংস্কৃতিক চেতনার গভীর তল থেকে উঠে এসেছে রাজনৈতিক স্বাধীকারের উপাদান। সাংস্কৃতিক চেতনার ঢেউ ১৯৫৪ সালের নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছিল; পথ তৈরি হয়েছিল পরবর্তী সকল সফল গণ-আন্দোলনের, যেপথে জন্মলাভ করেছে ১৯৭১ সালে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র হিসেবে তার সকল বৈশিষ্ট্য পূর্ণ করেছে। বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানায় বসবাস করা বহু ধর্ম-বর্ণ-নৃ-গোষ্ঠীর জীবন ধারা ও উৎসব অনুষ্ঠানের সম্মিলন ঘটেছে এদেশের জাতীয় সংস্কৃতিতে। ধর্ম-বর্ণের বৈচিত্র্যই এদেশের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য। বাংলাদেশি সংস্কৃতি বিশ্বের অন্যান্য জাতির সংস্কৃতি থেকে আলাদা। এ জাতির সংস্কৃতি সমন্বয়ের সংস্কৃতি; বিচ্ছেদ-বিভেদের নয়। এদেশের জনগণের মধ্যে পোষাক-পরিচ্ছদে, চাল-চলনে, সৃষ্টিতে-নির্মাণে, ভাষা-সাহিত্যে, জীবন-জীবিকায়, চিন্তা-চেতনায় এমন একটা বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে, যাকে বলে বৈচিত্র্যের মাঝে একই সুরের সঙ্গতি। যে সঙ্গতি এ দেশবাসীকে দিয়েছে জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবার অসীম সাহস। কিন্তু সাহসী জাতির রাজনৈতিক চেতনা আজ বিচ্ছিন্নতাবোধে আচ্ছন্ন। রাজনৈতিক অপসংস্কৃতির কালো ছায়া জাতীয় চেতনাকে বিনষ্ট করে চলেছে; বিনষ্ট করছে রাষ্ট্রীয় সংহতিকেও। আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো অনুসরণ করছে না সঠিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি। নীতিবোধের চর্চা বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নেই বললেই চলে। জাতীয় চেতনার বিকাশ ও রাষ্ট্রীয় সংহতি সমুন্নত রাখতে দুরভিসন্ধি ও ব্যক্তিস্বার্থমূলক রাজনৈতিক চরিত্রের অবসান হওয়া দরকার।

লেখক: সহকারী রেজিস্ট্রার, সাদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ।