আমরা কী খাই ? কী খাবো ? কীভাবে বেঁচে থাকবো ?

0
717

আমরা কী খাই ?  কী খাবো ?  কীভাবে বেঁচে থাকবো ?
ড. মোহাম্মদ সফিউল্লাহ্ মীর

বাঁচার জন্য মানুষকে খেতে হয়। খাদ্য দেহের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধি সাধন করে থাকে। খাদ্য পাওয়ার অধিকার মানব জীবনের একটি মৌলিক অধিকার। সৃষ্টির আদিকাল থেকেই খাদ্য অন্বেষণের তাগিদে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমাজে বসবাস করতে শুরু করে। খাদ্যের নিশ্চয়তা পেতে মানুষ সংগ্রাম করেছে বিস্তর; এখনো করছে। প্রাচীন বাংলায় মাঠ ভরা ধান ছিল; পুকুর ভরা মাছ ছিল, গোয়াল ভরা গরু ছিল, তখন একেকটি গ্রাম ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ।ইংরেজ শাসনামলে প্রচন্ড খাদ্যাভাব দেখা দেয়, তখন হতদরিদ্র মানুষের মাঝেখাদ্যের জন্য হাহাকার নেমে আসে।এসময় প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পারেনি, অপরদিকে খাজনা আদায়ের নামে ইংরেজ শোষক গোষ্ঠীর লুণ্ঠন জাতিকে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিয়েছিল।ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে(বাংলা ১১৭৬, ইংরেজি ১৭৭০ সালেসংগঠিত দুর্ভিক্ষ) দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ খাদ্য সঙ্কটে প্রাণ হারায়। বর্তমানে দেশখাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে; দেশে কোনো দুর্ভিক্ষ নেই, অথচ মানুষের হাতে তৈরি ভেজালখাদ্য খেয়ে মানুষ মরছে। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে!মানুষ চায় সুস্থ জীবন ধারণ করতে। সুস্থ জীবনধারণ করতে নিরাপদ, নির্ভেজাল ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া প্রয়োজন; প্রয়োজন অস্বাস্থ্যকর ও ভেজাল খাবার পরিহার করা। তৃপ্তিসহকারে খেয়ে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা সকলেই চায়, নিরাপদ খাদ্যই মানুষকে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা প্রদান করে। খাদ্য উৎপাদন, বিপণন ও বাজারজাতকরণে জড়িত কতিপয় অসাধু ব্যক্তি খাদ্যে ভেজাল করছে, আর ভেজাল খাদ্য খেয়ে অনিশ্চিত হচ্ছে মানব জীবন।

গত কয়েক দশকে মানুষের খাদ্যাভাসে বেশ পরিবর্তন এসেছে। প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী খাবারের জায়গায় স্থান করে নিয়েছে বেশ কিছু কৃত্রিম খাবার। এসব কৃত্রিম খাবার সুস্বাদুও মুখরোচক হয় বলে মানুষ এসবে ঝুঁকছে। আর খাদ্যকে মুখরোচক ও সুস্বাদু করতেকিংবা দীর্ঘ দিন সংরক্ষণে রাখতে রাসায়নিক পদার্থ মিশানো হয়, ফলে খাদ্য হয়ে পড়ে বিষাক্ত। এ বিষাক্ত খাদ্য মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর।প্রাচীন মানুষেরা প্রতিদিন খাদ্যের অন্বেষণে বের হতো, এক পর্যায়ে তারা খাদ্য শুকিয়ে মজুদ করতে শিখে। খ্রি.পূর্ব. ১২,০০০ অব্দেপৃথিবীর মধ্য-পূর্ব এবং প্রাচ্যে খাদ্যদ্রব্য সূর্যালোকে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হতো, এমনকি আগুনে ঝলসিয়েও খাদ্য সংরক্ষণ করা হতো। দীর্ঘ দিন খাদ্য পচনশীলতা থেকে রক্ষার জন্য পরবর্তীতে বরফের ব্যবহার শুরু হয়, কিন্তু আধুনিক যুগে এসে পচনশীলতা থেকে রক্ষার নামে রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে খাদ্যকে কু-খাদ্যে পরিণত করলো একদল অসাধু ব্যবসায়ী। অপরদিকে ভোজনরসিকদের উদরপূর্তির জন্য খাদ্যের নানা রকম রেসিপি’র নামেওরাসায়নিকের ব্যবহার খাদ্যকে আরেক ধাপ বিষে পরিণত করলো। বিশ্বের অনেক দেশের রাস্তা-ঘাটে কিছু সুস্বাদু খাবার সুনামের সহিত বিক্রি হয়। আমাদের দেশের রাস্তা-ঘাট-ফুটপাতেওহরেক রকমের খাবার অবাধে বিক্রি হচ্ছে, তবে তা অন্যান্য দেশের মতো সুনাম কুড়াতে পারেনি।এসব খাবার অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন এবং অনেক ক্ষেত্রে কৃত্রিম, তাই এগুলো স্বাস্থ্যসম্মত নয়।আইসিডিডিআরবি-এর এক গবেষণায় দেখা গেছে পথ খাবারের ৫৫ শতাংশে নানা ধরনের জীবাণু রয়েছে। আর এসব খাবার বিক্রেতাদের ৮৮ শতাংশের হাতে জীবাণু থাকে।আজকাল শুধু রাস্তার খাবারেই নয়, যেকোনো নামী দামি রেস্তোরাঁর খাবারেও রয়েছে ভেজাল।

অস্বাস্থ্যকর খাবারের দুটি ধরন লক্ষ্য করা যায়-এক হলো ক্ষতিকর ব্যাকটিরিয়া, ভাইরাস, পরজীবি ও জীবাণু দ্বারা দূষিত খাবার,আরেক হলো যেকোনো রাসায়নিক উপাদান মিশ্রিত ভেজাল খাবার। সরেজমিন ভেজালবিরোধী অভিযানে ভেজালেরদুঃসহতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষাক্ত সোডিয়াম সাইক্লোমেট,পচা গমের আটা, কাপড়ের রং ও পচা ডিম দিয়ে বিষ্কুটসহ সকল প্রকারবেকারি পণ্য তৈরি হচ্ছে।আইসক্রিম, মিষ্টি, ললিপপ, চকো তৈরিতেক্ষতিকর কাপড়ের রঙ ও সোডিয়াম সাইক্লোমেট ব্যবহার করা হচ্ছে। অপরদিকে মিষ্টি কুমড়ার সাথে সোডিয়াম সাইক্লোমেট ও রাসায়নিক ফ্লেভার মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে প্যাকেটজাত জুস। পামঅয়েলের সাথে রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রণ করে তৈরি করা হচ্ছে কনডেন্সড মিল্ক। দুধের ছানার পানির সঙ্গে খাওয়ার সোডা, বিষাক্ত পার-অক্সাইড ও বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে তৈরি করা হয় কৃত্রিম দুধ।মচমচা থাকার জন্য চানাচুর ও চিপ্স ভাজা হচ্ছে মবিল দিয়ে। মুড়ি ও জিলাপি ধপধপে সাদা করার জন্য ব্যবহার হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত হাইড্রোজ।মাত্রাতিরিক্ত ক্যালসিয়াম কার্বাইড দিয়ে পাকানো হচ্ছে সকল প্রকার দেশি ফল। অতিমাত্রায়ফরমালিন দেয়া হচ্ছে মাছ-মাংস ও শাক-সবজিতে।চালে পাওয়া গেছে বিষাক্ত ক্যাডমিয়াম। আটায় মিশানো হয় চক পাউডার। মাছ, পোল্ট্রি গোশত ও ডিমে পাওয়া গেছে মানব দেহের সহনীয় মাত্রার চেয়ে ৩/৪ গুণ বেশি ক্রোমিয়াম। গরু মোটাতাজা করার জন্য খাওয়ানো হয় স্টেরয়েড ট্যাবলেট। নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য তৈরির বিষয়তো আছেই। হোটেল রেস্টুরেন্টে মেয়াদোর্ত্তীর্ণ পণ্যের ব্যবহার, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে খাদ্য তৈরি, বাসি খাবার ও মরা মুরগির গোশত খাওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে। আবার মিনারেল ওয়াটারের নামে ওয়াসার পানি বোতলজাত করে বিক্রয়ের ঘটনাও ঘটছে। এভাবে কোনো-কোনো পণ্য ১০০ ভাগ পর্যন্ত ভেজাল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। অপরদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অস্ট্রেলিয়ার ওলিংগং বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে রাজধানী ঢাকাতে একটি গবেষণা জরিপ করে দেখেছে যে ৬৬ শতাংশ রেস্তোরাঁর খাবার দুষিত।আর৯৬ শতাংশ মিষ্টি, ৫৯ শতাংশ আইসক্রিম,৫৪ শতাংশ পাউরুটি, ২৪ শতাংশ বিস্কুট অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হয়। এসব খেয়ে দেশের মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

খাদ্যে রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রণের সমস্যা সম্পর্কেসাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর রসায়ন বিষয়েরসহকারি অধ্যাপক ড. তাসনিমা জান্নাত বলেন, সাধারণ মানুষের কাছে স্যাকারিন নামে পরিচিত সোডিয়াম সাইক্লোমেট চিনির চেয়েত্রিশগুণেরও বেশী মিষ্টি এবং দামে সস্তা, তাইচিনির বিকল্প হিসেবে ভেজালকারীরা এটি খাদ্যে ব্যবহার করে থাকে-যা মানবদেহের অনুকূল নয়, বরং অত্যন্ত ক্ষতিক্ষর। মাত্রাতিরিক্ত সোডিয়াম সাইক্লোমেটের প্রভাবেনারীদের ক্রোমোজোমের ক্ষতি হয়ে ডাউনসিন্ড্রোমে আক্রান্ত সন্তান জন্ম দিতে পারে, আর পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোন নিঃস্বরণ কমে গিয়ে সন্তান উৎপাদনে অক্ষমতা সৃষ্টি হতে পারে; এমনকি এর প্রভাবে মানব শরীরে এন্টিবায়টিক জাতীয় ঔষধে কাজ না হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়, হৃদপিন্ডের মাংসপেশী শক্ত হয়ে যায়, কিডনি ও লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হয়।অপরদিকে কার্বাইডের প্রভাবেমানবদেহে হাইপার টেনশন, জন্ডিস, ক্যান্সার, কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। আরমাত্রাতিরিক্ত ফরমালিনের প্রভাবে মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়েপ্রাথমিকভাবে হাঁচি কাশি, শ্বাস কষ্ট, পেটেরপীড়া, বদহজম ও ডায়রিয়াসহবিভিন্ন প্রকার চর্মরোগ দেখা দিতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদী রোগ হিসেবে আলসার, পাকস্থলীর ক্যান্সার, ফুসফুস ও লিভার ক্যান্সার হতে পারে। শিল্পের বর্জ্য থেকে তৈরিকরা ভেজাল রাসায়নিক সার ফসলী জমিতে প্রয়োগেউৎপাদিত ধানের চালে মাত্রাতিরিক্ত ক্যাডমিয়াম পাওয়া গেছে। আর ক্যাডমিয়াম যুক্ত চালের ভাত খেয়ে মানুষ হৃদরোগ ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। মাত্রাতিরিক্ত ক্রোমিয়ামও অন্যান্য রাসায়নিকের মতো মানবদেহে চর্মরোগ, কিডনী বিকল হয়ে যাওয়া ও যকৃত নষ্ট হওয়ার মতো ক্ষতিকর পরিণতি ডেকে আনে। একদল অসাধু ব্যবসায়ীট্যানারির বর্জ্য থেকেমাছ ও মুরগীর খাবার তৈরি করে থাকে, আরএসব বর্জ্যজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করে বড় হওয়ামাছ, মুরগীরমাংস ও ডিমসবসময়ই মানুষ খেয়ে থাকে, ফলেসহ্য ক্ষমতার কয়েকশ’ গুণ ক্রোমিয়াম মানব দেহে প্রবেশ করে। অপরদিকে স্টেরয়েড ইনজেশান দিয়েমোটাতাজা করা গরু-মহিষের মাংস খাওয়ার মধ্যদিয়ে স্টেরয়েড মানব দেহে প্রবেশ করে, যার ফলেমানুষের হাড়ের ক্ষয় ত্বরান্বিত হয়; ডায়বেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে এবং কিডনি ও লিভারের প্রভূত ক্ষতিসাধিত হয়;পরিণামে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। হাইড্রোজও মানবদেহের উচ্চ রক্তচাপ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।এভাবে অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতিক্রিয়া হিসেবেসকল বয়সী মানুষই ক্ষতিগ্রস্থ হয়, তবে শিশু, অন্তঃসত্ত¡া নারী ও প্রবীণরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, প্রতি বছর দুষিত খাবারের কারণে সারা বিশ্বে ৬০ কোটি মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। মৃত্যু হচ্ছে ৪ লাখ ২০ হাজার জনের। এর মধ্যে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়প্রতি বছর দুষিত খাবার খেয়ে প্রায়১ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করছে, আর অসুস্থ হচ্ছে প্রায় ১৫ কোটি মানুষ। একই প্রতিবেদনে বলা হয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি ১০ শিশুর মধ্যে ৩ জনই ডায়রিয়ায় ভোগে। খাদ্যে বিষক্রিয়ার ফলে বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।অন্য একটি গবেষণা সূত্র মতে, বাংলাদেশে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর প্রায় দেড় লাখ মানুষমারা যাচ্ছে। আর এদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রতিবছর সর্বস্বান্ত হচ্ছেন প্রায় ৭০ ভাগ পরিবার। অপরদিকে দেশে দুই কোটিরও অধিক লোক কোনো না কোনোভাবে কিডনি জটিলতায় ভোগছে। প্রতি বছর মাতৃগর্ভে বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নিচ্ছে প্রায় ৫ লাখ। এভাবে বছরে প্রায় ২০ লাখ মানুষের জীবন কেড়ে নেয় অনিরাপদ ভেজাল খাদ্য।তারপরও কোনোভাবেই থামছে না খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণের প্রবণতা।

বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও মহানগরে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত গঠনের বিষয়ে ২০০৯ সালের হাইকোর্টের আদেশ এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। নিরাপদ খাদ্য আইন,২০১৩ তেও খাদ্য আদালত স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে।উক্ত আইনে অনুর্ধ্ব ৫ বছর কারাদন্ড বা অনধিক ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে। ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (গ) এর ১(ঙ) ধারায় খাদ্যে এবং ঔষধে ভেজাল মেশালে বা বিক্রি করলে অপরাধী ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা ১৪ বছর কারাদন্ড দন্ডনীয় হবে বলে বিধান রয়েছে।ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৫ অনুযায়ী ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন বা মজুদ করলে ২০ লাখ টাকা জরিমানা ও যাবজ্জীবন কারাদন্ডর বিধান রাখা হয়েছে।খাদ্যে ভেজাল মিশানোর অপরাধে ভারতে যাবজ্জীবন ও চীনে মৃত্যুদন্ড, পাকিস্তানে ২৫ বছর কারাদন্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে সশ্রম কারাদন্ডর বিধান রয়েছে। আমাদের দেশের বিদ্যমান আইনে মৃত্যুদন্ড নেই, তবে যতটুকু আছে তারও নেই কোনো প্রয়োগ। এদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ হয়েও ধর্মের নৈতিক প্রভাব পড়ছে না খাদ্যে ভেজাল মিশ্রণকারী ব্যক্তিদের ওপর। তারা সবকিছু ভুলে সম্পদের লিপ্সায় অধিক মুনাফার লোভে এই হীন কর্মটি করে যাচ্ছে।মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মাঝে মধ্যে ভেজালকারী খুনিকে কিছু টাকা জরিমানা করেই ছেড়ে দেয়া হচ্ছে, এরপর ভেজালকারী আরও বিপুল উৎসাহে অর্থ উপার্জনের নেশায় ভেজালের মহোৎসব চালায়। মানবতার বিরুদ্ধে তাদের এ জঘন্যতম অপরাধের বিচার কে করবে?ভেজালকারীরা যখন থামছেই না; তাদের অপরাধের মাত্রা যখন বেড়েই চলছে, তাই এখন খাদ্য মানেই বিভিন্ন রাসায়নিকের মিশ্রণ আর মানুষের নানা রোগব্যাধি ও মৃত্যুর আতঙ্ক। তাহলে মানুষ কীভাবে নিরাপদ খাদ্যের সংস্থান করবে? ভেজাল খাদ্য না খেলে কি-ই বা খাবো ? কীভাবে বাঁচবো ? খেয়ে ?নাকি না খেয়ে?