চট্টগ্রামে বসছে জাতীয় অ্যাথলেটিক্সের আসর

0
527

চট্টগ্রামে বসছে জাতীয় অ্যাথলেটিক্সের আসর

২০০৫ সালে সবশেষ চট্টগ্রামে বসেছিল অ্যাথলেটিক্সের জাতীয় আসর। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর আবার চট্টগ্রামে বসতে যাচ্ছে খেলাধুলার সবচাইতে বড় ইভেন্ট অ্যাথলেটিক্সের জাতীয় আসর।  বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে এবারের এই আসরের নাম রাখা হয়েছে ‘মুজিব বর্ষ ২০২০ ৪৩ তম জাতীয় অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা’। এর আগে তবে বর্তমানে দেশের অ্যাথলেটিক্সের দৈন্য দশার সময় ঘাসের মাঠে এই ধরনের প্রতিযোগিতা কতটা সুফল বয়ে আনবে সেটা প্রশ্ন হয়েই থাকে। তবে আয়োজকদের আশা ঘাসের মাঠে হলেও এই প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগীদের কোন ক্ষতি হবে না। কারো ইনজুরিতে পড়ারও সম্ভাবনা নাই। এই প্রতিযোগিতাকে ঘিরে চট্টগ্রামে দেশের সেরা অ্যাথলেটদের মেলা বসতে যাচ্ছে এবং  চলবে আগামী ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। এরই মধ্যে দেশের প্রায় সাড়ে ছয়শর মত অ্যাথলেট অবস্থান করছে চট্টগ্রামে। আগামীকাল সকাল থেকে মাঠে গড়াবে খেলাধুলার মাদার এই ইভেন্ট। আগামীকাল বিকেলে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে এবারের জাতীয় অ্যাথলেটিক্সের উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সভাপতি এ এস এম আলি কবির। উল্লেখ্য এবারের জাতীয় অ্যাথলেটিঙ প্রতিযোগিতার স্পন্সর করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। প্রায় ৩১ লাখ টাকা বাজেটের এই প্রতিযোগিতার ২৫ লাখ টাকা দিচ্ছে সিটি কর্পোরেশন। অ্যাথলেটিঙের এবারের জাতীয় আসরে অংশ নিচ্ছে ৬৫০ জন অ্যাথলেট। যাদের মধ্যে ৫০০ জন পুরুষ আর ১৫০ জন মহিলা। পুরুষদের ২২টি এবং মহিলাদের ১৪ ইভেন্টে অনুষ্ঠিত হবে এবারের প্রতিযোগিতা।

দেশের ৬৪টি জেলা, ৮টি বিভাগ, বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা বোর্ড, বিকেএসপি, বিজেএমসি ও এ্যাফিলিয়েটেড সামরিক এবং বেসামরিক বাহিনীর অ্যাথলেটরা অংশ নিচ্ছে এবারের প্রতিযোগিতায়। এই প্রতিযোগিতার সবচাইতে আকর্ষনীয় ইভেন্ট ১০০ মিটার স্প্রিন্ট অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল বিকেল ৪টায়। পুরুষ এবং মহিলা দু বিভাগের দ্রুততম মানব-মানবীর এই লড়াইটি অনুষ্ঠিত হবে ১৫ মিনিট আগে এবং পরে। এছাড়া গোল্ড, সিলভার এবং ব্রোঞ্জের জন্য অ্যাথলেটরা লড়বে আরো ৩৪টি ইভেন্টে। যেখানে বেশ কয়েকটি ইভেন্ট আয়োজিত হবে শারিরীক শিক্ষা কলেজ মাঠে। তবে বেশিরভাগ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে।

অ্যাথলেটিক্সের এই জাতীয় প্রতিযোগিতাকে ঘিরে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে তৈরি করা হয়েছে রঙ দিয়ে ট্র্যাক। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। আয়োজকরা আশা করছেন এই প্রতিযোগিতা থেকে মেধাবী অ্যাথলেট বের করতে পারবেন তারা। ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট আবদুর রকিব মন্টু বলেন আমরা যদি তিনজনও ভাল মানের অ্যাথলেট তৈরি করতে পারি তাহলে সেটা হবে আমাদের স্বার্থকতা। আর সে লক্ষ্যে তারা কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানালেন ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক। যদিও ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক জানালেন জেলা কিংবা উপজেলা পর্যায় থেকে সেভাবে এখন আর অ্যাথলেট উঠে আসছে না। কারন জেলা কিংবা বিভাগের কর্মকর্তারা ফেডারেশনের কথা শোনেনা। যে কারনে প্রত্যাশিত মানের অ্যাথলেট বেরিয়ে আসছে না বলে জানালেন এই কর্মকর্তা। তবে ফেডারেশন চাইছে অ্যাথলেটিঙের এই দ্বৈন্য দশা কাটিয়ে উঠতে। আর সে জন্য তৃণমুল পর্যায় থেকে অ্যাথলেট তুলে আনার কোন বিকল্প নেই বলেও জানালেন এই ফেডারেশন কর্তা।

এদিকে এই জাতীয় অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা উপলক্ষ্যে গতকাল সিজেকেএস সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। আর সে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট আবদুর রকিব মন্টু। বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলহাজ্ব আলি আব্বাস, প্রতিযোগিতার স্পন্সর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সামসুদ্দোহা, সিজেকেএস অতিরিক্ত সাধারন সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, সিজেকেএস অ্যাথলেটিক্স কমিটির চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক, সম্পাদক কামাল উদ্দিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিজেকেএস যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, মশিউর রহমান চৌধুরী সহ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন এবং সিজেকেএস এর কর্মকর্তাবৃন্দ। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত ৪৩ তম জাতীয় অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতাকে সামনে রেখে আজ এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল তিনটায় এম এ আজিজ স্টেডিয়াম থেকে শুরু হয়ে নগরী বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করবে এই র‌্যালী। এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় নগরীর এক হোটেলে জাজেস রিফ্রেশার্স কোর্স উদ্বোধন করা হয়। এবারের প্রতিযোগিতা পরিচালনা করতে প্রায় দেড় শতাধিক বিচারক নিয়োজিত থাকবেন। আগামী শনিবার ভাঙবে এই মিলন মেলা। এখন কতটা সফল হয় মুজিব বর্ষের এই এই জাতীয় অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা সেটাই দেখার।