রবিবার (১৯ জানুয়ারী) বেলা ১১ টায় শহরের কোর্ট বিল্ডিং চত্তরে আয়োজিত এক মানব বন্ধনে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি প্রত্যাশা করেছেন কক্সবাজারের লবণ চাষীরা। লবণ চাষীদের প্রত্যাশা এক মাত্র প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টিই লবণের ন্যায্যা মূল্য নিশ্চিত করতে পারে।
সমাবেশে দাবি জানানো হয়, মাঠ পর্যায়ে লবণের মূল্য কেজি প্রতি ১১/১২ টাকা বা মণ প্রতি ৪৫০-৫০০ টাকা করা, লবণ আমদানি সম্পূণরূপে নিষিদ্ধ করার পাশা পাশি মানব দেহের ক্ষতিকারক সোড়িয়াম সালফেট, সোড়িয়াম ক্লোরাইড় আমদানী নিষিদ্ধ, সহজ শর্তে লবণ চাষিদের ঋণ সহায়তা, মাঠ পর্যায়ে প্রান্তিক চাষীদের পূর্বের ঋণ মওকুফ ও প্রণোদনা প্রদান সহ বিসিকের মাধ্যমে ২ লক্ষ মে.টন লবণ আপদ কালীন সময়ের জন্য মওজুদ করা।
বাংলাদেশ লবণ চাষী বাচাঁও পরিষদের আহবায়ক সাজেদুল করিম এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব এহছানুল করিম’র সঞ্চালনায় অনুষ্টিত মানব বন্ধনে পবিত্র কোরআন থেকে তেলোয়াত করেন বাংলাদেশ লবণ চাষী বাচাঁও পরিষদ’র সদস্য নাজের হোসেন মনজু,বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ লবণ চাষী বাচাঁও পরিষদ’র যুগ্ম আহবায়ক মো. জাকারিয়া, মো.আবদু শুক্কুর, বাংলাদেশ লবণ চাষী বাচাঁও পরিষদ’র যুগ্ম আহবায়ক সরওয়ার আলম, বাংলাদেশ লবণ চাষী বাচাঁও পরিষদ’র যুগ্ম আহবায়ক হালিমুর রশিদ, বাংলাদেশ লবণ চাষী বাচাঁও পরিষদ’র সদস্য আসাদুল্লাহ সায়েম, লবণ ব্যবসায়ী সিরাজ মিয়া বাশি, সদর উপজেলা লবণ ব্যবসায়ীর পক্ষে মো.কামাল উদ্দিন রহমান পিয়ারু, লবণ ব্যবসায়ী পানির ছড়ার মাষ্টার আনছার উল্লাহ,লবণ ব্যবসায়ী শামশুল হক. কুতুবজুমের লবণ ব্যবসায়ী শাহাব উদ্দিন প্রমুখ।
বাংলাদেশ লবণ চাষী বাঁচাও পরিষদের আহ্বায়ক সাজেদুল করিম বলেন, বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ও মানবতার নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন আপনি ১৫ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বিশে^ যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা অনন্য। আমরা আপনার দেশের লোক ৩০ হাজার চাষী এবং ৩০ লাখ লোকের জীবন জীবিকা ও কর্মসংস্থানের কথা বিবেচনা করে আমাদের প্রাণের দাবিগুলো পূরন করবেন। আপনার কাছে তা প্রত্যাশা করছি।
তিনি আরো বলেন, বিসিকের মাধ্যমে ২ লাখ মেট্রিক টন লবণ মজুদ রাখা হোক। যাতে কেউ দেশে লবণের ঘাতটি আছে কথাটি তুলতে না পারে। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে লবণের বাজার দর কেজি প্রতি ৪/৫ টাকা এবং মনপ্রতি ১৭০/১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।তাতে লবণ চাষীদের মাঠ শ্রমিকের বেতন ও হয়না। চলতি মৌসুমে দেশে লবণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ১৮ লাখ মেট্রিক টন। লবণের ন্যায্য মুল্য নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তিনি।
বাংলাদেশ লবণ চাষী বাঁচাও পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক এহছানুল করিম বলেন, ২০১৮-২০১৯ সালে ১০শতাংশ প্রসেস লস ধরে ভোজ্য ,শিল্প মৎস ও প্রাণী সম্পদ খাতে লবণের চাহিদা ছিল ১৬.৫৭ লক্ষ মে.টন। উৎপাদনের লক্ষ্য ছিল ১৮ লক্ষ মে.টন।
এর পরেও কিছু অসাধু লবণ ব্যবসায়ী , অতি মুনাফা লোভী মিল মালিক ও ষড়যন্ত্রকারীরা লবণের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে শিল্প লবণ আমদানীর অজুহাতে সোডিয়াম সালফেট, সোডিয়াম ক্লোরাইড় আমদানি করে। যার ফলে দেশীয় লবণ শিল্প আজ ধংশের দ্বারপ্রান্তে। এবং লবণের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে চাষীরা দিশেহারা। লবণের মাঠ চাষীশূন্য ও জমির মালিকরা হতাশ। প্রায় চাষযোগ্য জমির ৩০ শতাংশ জমি অব্যবহৃত থেকে গেছে যা দেশের অর্থনীতির জন্য বড় ক্ষতি। মানব বন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি স্বারক লিপি প্রদান করা হয়।