২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে হওয়ার পর থেকে পিছু নিয়েছে নানা রকমের ঝামেলা। অভিযোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার পর সবচাইতে বড় পরীক্ষা; ইমপিচমেন্টের মুখে পড়তে হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প সিনেটে ইমপিচমেন্ট না হলেও তবে অসম্মান থেকে মুক্তি পাননি । অর্থাৎ, আপাতত মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদ থেকে তাঁকে সরতে হচ্ছে না৷ তাঁর দলেরই এক সেনেটর দলীয় হুইপ উপেক্ষা করে ভোট দিলেন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ৷ অপমান থেকে পুরোপুরি রক্ষা পাননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ৷
মূলত দু’টি বিষয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস হয়েছিল। এক, পুনর্নিবাচনের সম্ভাবনা বাড়াতে ট্রাম্প বিদেশি হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন ৷ ইউক্রেনের সরকারের উপর অনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে তিনি রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চেয়েছিলেন৷ এবং দুই, তিনি জাতীয় নিরাপত্তার তোয়াক্কা করেননি এবং সংসদের কার্যকলাপে বাধা দিতে অভূতপূর্ব অভিযান চালিয়েছেন ৷ গত মাসেই ডেমোক্র্যাট অধ্যুষিত মার্কিন কংগ্রেস (পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ) প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ইমপিচমেন্টের পক্ষে রায় দিয়েছিল৷ প্রস্তাব পাস হওয়ার পরে তা যায় উচ্চকক্ষ বা সিনেটে ৷ যেখানে রিপাবলিকানদের ভোট বেশি ৷ ১০০ সদস্যের সিনেটে রিপাবলিকান সিনেটরের সংখ্যা ৫৩ ৷ দীর্ঘ শুনানির পর সিনেটে ভোটাভুটি শুরু হয় ৷ সেখানে প্রথম প্রস্তাবে ট্রাম্পের বিপক্ষে ভোট দেন রিপাবলিকান সিনেটর মিট রোমনি ৷ অতীতে যিনি বারাক ওবামার বিরুদ্ধে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে লড়াইও করেছেন ৷ রোমনি কেবল ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোট দেননি, সিনেটে দাঁড়িয়ে কার্যত তুলোধোনা করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্টকে ৷ বুধবার তিনি বলেছেন, ‘‘দেশের সার্বভৌমত্ব, মূল্যবোধ এবং নিরাপত্তা নিয়ে ছেলেখেলা করেছেন ট্রাম্প৷’’
মুক্ত হয়েই একটি পোস্টার টুইট করেন প্রেসিডেন্ট ৷ একই সঙ্গে জানিয়েছেন আজ, বৃহস্পতিবার দেশের মানুষকে বার্তা দিতে পারেন তিনি ৷ পোস্টারে দেখা যাচ্ছে, আগামী বহু বছর ট্রাম্পই ক্ষমতায় থাকবেন। যদিও মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী কোনও প্রেসিডেন্ট দুই বারের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেন না ৷ ফলে এ বারই শেষ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়াতে পারবেন ট্রাম্প ৷
অ্যামেরিকায় কোনও প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব ওঠাই যথেষ্ট অসম্মানের ৷ তার মধ্যে ট্রাম্পের নিজের দলের সিনেটর তাঁর বিরুদ্ধে একবার ভোট দেওয়ায় বিষয়টির গুরুত্ব আরও বেড়ে গেছে ৷ ডেমোক্র্যাটরা স্বাভাবিক ভাবেই প্রচার করবেন যে, সিনেটে রিপাবলিকানরা ট্রাম্পকে আড়াল করার চেষ্টা করেছেন৷ সাক্ষী পর্যন্ত ডাকতে দেওয়া হয়নি ৷ ফলে সিনেটের বিচার নির্ভুল নয়। কংগ্রেসের স্পিকার ন্যানসি পেলোসি লিখেছেন, ‘ট্রাম্প এখনও দেশের গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক৷’
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সিনেটের বিচারসভায় ডেমোক্র্যাটরা প্রাক্তন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনকে নিয়ে আসার কথা বলেছিলেন৷ বোল্টন সাক্ষী দিতে রাজিও হয়েছিলেন ৷ কিন্তু যে ভাবে সাক্ষীদের কাছ থেকে রিপাবলিকান সিনেটেররা ট্রাম্পকে বাঁচিয়েছেন তা সাধারণ মানুষ খুব ভাল চোখে দেখেননি। ফলে আগামী নির্বাচনে এর প্রভাব পড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে৷