করোনা ভাইরাস: পৃথিবী কি ধ্বংসের পথে ?‬

0
547

নতুন করোনা ভাইরাসের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে ৷ একইসঙ্গে মানুষের ভেতরও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ৷ বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরাও এর ব্যাখ্যা দিতে শুরু করেছেন ৷ কেউ কেউ বলছেন, পৃথিবীর ধ্বংস অনিবার্য হয়ে উঠেছে ৷

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয় নতুন করোনা ভাইরাসের প্রকোপ৷ এখন সারাবিশ্বের প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষের ভেতরে মিলেছে এই ভাইরাসের অস্তিত্ব৷

 নানা সময়ে মহামারি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে একেক ধর্মে একেকভাবে ব্যাখ্যা করা হয়৷ যেমন, বাইবেলের উক্তি তুলে ধরে অনেক খ্রিস্ট্রীয় অনুসারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, এমন একটি সময় আসবে  যখন একটি রোগে অনেক মানুষ মারা যাবে ৷

একজন লিখেছে ,  দুঃখের দিনের শুরু- ম্যাথু ২৪:৩-৮ ৷ আরেকজন  যিশু ফিরছেন এই হ্যাশট্যাগ দিয়ে লিখেছেন, অস্ট্রেলিয়ার বনাঞ্চলের আগুন; করোনাভাইরাস; অপ্রচলিত জায়গায় ভূমিকম্প; বিশ্বব্যাপী হিংসা/খুন বেড়ে যাওয়া; ক্ষুধার্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া; আর তারা যারা পুনরুত্থানের কিতাবকে অবজ্ঞা করে ৷

ইসলাম ধর্মের অনেক অনুসারীও ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন ৷ অনেকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বারবার হাত ধোয়ার পরামর্শের সঙ্গে পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়ার আগে ওযু করার সঙ্গে মিলিয়েছেন ৷   অবশ্য বিশেষজ্ঞরা সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে বলেছেন ৷

অনেকে হাদিসে বর্ণিত একটি অসুখের কথা উল্লেখ করে বলেছেন যে, পৃথিবী শেষ হবার আগে একটি রোগ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে ৷ অনেকে কেয়ামতের আগে কাবায়  তাওয়াফ বন্ধ হবে এই ঘটনার সঙ্গে চলমান করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে কাবায় ওমরাহ বন্ধের তুলনা করেছেন ৷

অনেক হিন্দু ধর্মের অনুসারীও এ নিয়ে তাদের ব্যাখ্যা হাজির করেছেন ৷ অল ইন্ডিয়া হিন্দু মহাসভার সভাপতি স্বামী চক্রপাণি এই ভাইরাসকে একটি  রাগী দেবতা বলে অভিহিত করেছেন ৷ করোনা ভাইরাস নয়, এটি নিরীহ প্রাণীকে রক্ষার অবতার ৷ যারা এদের ভক্ষণ করেন, তাদের মৃত্যু ও সাজার শাস্তি শোনাবার জন্য এরা এসেছে বলেন তিনি ৷

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের করোনার মূর্তি তৈরি করে ক্ষমা চাওয়ার দরকার ছিল বলে মনে করেন চক্রপাণি ৷ আসাম বিজেপির সদস্য সুমন হরিপ্রিয় দাবি করেন যে, গোমুত্র ও গোবর করোনা ভাইরাসের দূষণ থেকে বাঁচায় ৷

তবে পৃথিবীতে এর আগে রোগের এর চেয়েও ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব ঘটেছে৷ যেমন চতুর্দশ শতকে প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটায় ইউরেশিয়া অঞ্চলের কমপক্ষে সাড়ে সাত কোটি থেকে ২০ কোটি মানুষ মারা গেছেন৷ এই প্লেগকে বলা হত ‘ব্ল্যাক ডেথ’৷ এটি ইঁদুর থেকে ছড়িয়েছিল ও এক রকমের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ৷

১৯১৮ সালে ‘স্প্যানিশ ফ্লু’ নামে পরিচিত ইনফ্লুয়েঞ্জা ৫০ কোটি মানুষকে আক্রমণ করে এবং ১.৭ কোটি থেকে ৫ কোটি মানুষ মারা যান৷ কেউ কেউ অবশ্য বলেন তখন ১০ কোটি মানুষ মারা গিয়েছিলেন ৷