শতাব্দীর পর শতাব্দির ২০তম বছরে সংক্রামক মহামারীতে আক্রান্ত হয়েছে মানব সভ্যতা।
রহস্যময়ভাবে প্রতি শতাব্দীর ২০তম সাল চিহ্নিত হয়েছে মানব সভ্যতার জন্য প্রাণঘাতি বছর। ঠিক ১০০ বছর পরপর প্লেগ, কলেরা, ফ্লু কিংবা করোনার মত ভয়াল সব অনুজীবের আক্রমণে ‘জনশূন্য’ হয়েছে বহু জনপদ।
১৭২০ সালে ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে পরে সংক্রামক মহামারী প্লেগ। তিন বছর ধরে সমগ্র ইউরোপের পাশাপশি আফ্রিকা ও এশিয়ার কিছু অংশে তান্ডব চালিয়ে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যুর কারণ হয় এই মরণব্যাধি।
এর ঠিক একশ বছর পর ১৮২০ সালে আঘাত হানে মহামারী কলেরা। ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও ভারতীয় উপমহাদেশে মৃত্যুর কালো ছায়া ছড়িয়ে পরে। লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে অস্তিত্বের জানান দেয় জলবাহীত ব্যাকটেরিয়া জনিত ব্যাধি কলেরা।
আরো একশ বছর পর ১৯২০ সালে ইউরোপ থেকে পৃথিবীর নানা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে আরেক ভাইরাস স্প্যানিশ ফ্লু। ধ্বংসলীলায় আগের সব ব্যাধীকে ছাড়িয়ে যাওয়া সর্বগ্রাসী স্প্যানিস ফ্লু ১৯১৮ সালে প্রথম অস্তিত্ব জানান দিলেও ১৯২০ সালে ছড়িয়ে পড়ে নানা অঞ্চলে। বিশ্বের প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয় এই ব্যাধিতে। মৃত্যু হয় অন্তত দশ লক্ষ মানুষের।
ঠিক ১০০ বছর পর একবিংশ শতাব্দীতে এই চক্রের সর্বশেষ সংযোজন ২০২০ সালে আঘাত হানা করোনাভাইরাস। চিনের উহান প্রদেশ থেকে যাত্রা শুরু করে করোনা সংক্রমণ ঘটায় বিশ্বজড়ে। এখন পর্যন্ত করোনার আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছে সাড়ে সাত হাজারেরও বেশি মানুষ। বহু উন্নত দেশের আধুনিক নগরীকে জনশূন্য করেছে করোনা। বিশ্বের বহু দেশ করোনাকে মহামারী ঘোষণা করে জারি করেছে জরুরী অবস্থা।
কয়েকটি শতাব্দীর ২০তম সালে আঘাত হানা অন্যান্য মহামারী থেকে বহু সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে রক্ষা পেয়েছে মানব সভ্যতা। প্রাণঘাতি করোনায় সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান কতদূর পৌঁছুবে এখন সেই দিকে তাকিয়ে আছে পৃথিবীর অজস্র মানুষ।