সারাদেশে ১০ দিন গণপরিবহন , অনির্দিষ্টকালের জন্য যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল; সকল লোকাল-মেইল ট্রেন চলাচল বন্ধ
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার সারাদেশে গণপরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। তবে এসময়ে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ওষুধ, জরুরি সেবা, জ্বালানি, পচনশীল পণ্য পরিবহন নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। পণ্যবাহী যানবাহনে কোনো যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) সকালে মন্ত্রণালয় থেকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক ভিডিওবার্তায় একথা জানান।
এদিকে মঙ্গলবার ২৪ মার্চ বিকেল থেকে সারাদেশে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলও বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।পরবর্তী নিরেদশনা না দেওয়া পর্যন্ত এই ঘোষণা কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম খান।তিনি বলেন, যাত্রীবাহী নৌ চলাচল বন্ধ রাখা হলেও পণ্যবাহী নৌযানসহ জরুরি প্রয়োজনে নৌযান চলাচল করবে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে জনসমাগম এড়ানোসহ গণপরিবহনে ভ্রমণ নিষেধ করে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশে লোকাল ও মেইল ট্রেন, গণপরিবহনের পাশাপাশি যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলও বন্ধ ঘোষণা করা হলো।
এছাড়াও বাংলাদেশের সব লোকাল ও মেইল ট্রেন সীমিত আকারে চলবে বলে ঘোষনা দিয়েছিল রেল কর্তৃপক্ষ। ২৬ মার্চ থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সব প্রকার ট্রেন সীমিত আকারে চলবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া লোকাল ও মেইল সব ধরনের ট্রেন বন্ধ করা হয়েছে।রেল দফতর থেকে ঘোষণা আসার পর মঙ্গলবার থেকে এসব ট্রেন বন্ধ করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল।এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল বন্ধ বলে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ আলম। সে হিসেবে ২৬ মার্চ থেকে দেশের সব ট্রেন চলাচল বন্ধ।রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক নাসির উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ২২টিরও বেশি ট্রেন বন্ধ রাখার প্রস্তাব দেওয়ার পর মঙ্গলবার থেকে সব লোকাল ও মেইল ট্রেন বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া আন্তঃনগর ট্রেনও কয়েকদিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে। আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। তবে মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে।
রেলের মহাপরিচালক শামসুজ্জামান এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা নিশ্চিত করে বলেন, আন্তনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি তারা আগেই বন্ধ রেখেছেন। এরপরও কেউ অনলাইনে বা অনেক আগে অগ্রিম টিকিট কেটে রাখলে তা আইন অনুযায়ী ফেরত দেওয়া হবে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গতকাল অফিস-আদালত ছুটি ঘোষণার পর রাতে কমলাপুর রেলস্টেশনসহ বেশির ভাগ স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় লেগে যায়। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হলে রাতেই মেইল ও লোকাল ট্রেন বন্ধের নির্দেশনা আসে। এরপর সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে মহাপরিচালকের পক্ষে অতিরিক্ত মহাপরিচালক মিয়াজাহান রেলের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকদের (জিএম) মেইল ও লোকাল ট্রেন বন্ধের কথা নির্দেশনা দেন।