ডেস্ক রির্পোট: ১৯৯২ সালের পর দেশের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এত আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি আর কখোনো পড়েনি। করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস, পরীক্ষা ও ভর্তি বন্ধ থাকায় অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না। কোনো কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালেয়ে বেতনের ৫০ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে।
এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি, প্রাইম ইউনিভার্সিটি, ইর্স্টান ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ও ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সকলকে মার্চ মাসের ৫০/৬০ শতাংশ বেতন পরিশোধ করা হলেও এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধ করা সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে।
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির স্টাফদের মার্চের বেতনের ৩০ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছে টিউশন ফি, ভর্তি ফি ও পরীক্ষার ফি না পাওয়ায় বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নবী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় না হলে আমাদের কিছু করার ক্ষমতা নেই। এ কারণে শিক্ষক ও স্টাফদের পুরো বেতন পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ বাবদ আমাদের মাসিক সাড়ে ৩ কোটি টাকা প্রয়োজন হয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের কাছে টাকা না পেলে কারও বেতন নিয়মিত পরিশোধ করা সম্ভব হবে না।’
অন্যদিকে দেশের উচ্চ ফির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়মিত তাদের স্টাফদের বেতন পরিশোধ করছেন। তার মধ্যে নর্থ সাউথ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট আ্ই.আই.ইউসি, ইউ.আ্ই.ইউ. রয়েছে।
সারাদেশে ১০৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্সে সাড়ে তিন লাখের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষক ও ১৩ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ হাজার ৫০৪ কোটি টাকা উপার্জন হলেও ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা।
এ বিষয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির জাগো নিউজকে বলেন, ‘বর্তমান সংকটের মধ্যে আমাদের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সকল স্টাফদের নিয়মিত বেতন-ভাতা পরিশোধ করলেও কিছু বিশ্ববিদ্যালয় পারছে না। শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা ও নতুন ভর্তি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা সরকারের সকল মহলের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বর্তমান সংকটে আমদেরকে অর্থ ঋণ হিসেবে দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস, পরীক্ষা ও শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে কিছু দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে করতে বলা হয়েছে। এটি শুরু হয়ে গেলে কিছুটা সংকট নিরসন হবে আশা করা যায়।’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহিদুল্লাহ বলেছেন, তারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বাঁচানোর সমাধান খুঁজছেন।
তিনি আরও বলেন যে, “একথা সত্যই সত্য যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সমস্যায় পড়েছে। তারা ঋণের জন্য আবেদন জমা দিয়েছিল। আমি সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠিয়ে দেব,”