সংযুক্ত আরব আমিরাতের মহাকাশযান মঙ্গল গ্রহের পথে

0
704

সংযুক্ত আরব আমিরাতের একটি মহাকাশযান জাপান থেকে উৎক্ষেপণের পর এখন মঙ্গল গ্রহের পথে। জাপানের সবচেয়ে বড় রকেটবন্দর তানেগাশিমা থেকে উড্ডয়ন করে আমিরাতের স্যাটেলাইট ‘হোপ মিশন’। মহাকাশযানটির ওজন ১ দশমিক ৩ টন। প্রায় ৫০০ মিলিয়ন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এ রোবটিক মহাকাশযানটি ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে গন্তব্যে পৌঁছাবে।  যা কাকতালীয়ভাবে আরব আমিরাত প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী।

মঙ্গল গ্রহের আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ে পরীক্ষা করতে প্রায় পাঁচশ মিলিয়ন কিলোমিটার পথ পাড়ি দিচ্ছে মহাকাশযানটি।প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এর আগে দুবার প্রস্তুতির পরেও এ মিশনের উৎক্ষেপণ স্থগিত করা হয়েছিল।  মিশনটির বৈজ্ঞানিক দলের প্রধান সারাহ আল হামিরি মহাকাশযানটির সফল উৎক্ষেপণের পর তার স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, তার দেশের ওপর এর প্রভাব অনেকটাই ৫১ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের চাঁদে পা রাখার মতো। সেটিও ২০ জুলাই হয়েছিল।আরব আমিরাতের এ মিশনসহ এ মাসেই তিনটি মিশন রওনা দিতে যাচ্ছে মঙ্গলে।

মহাকাশযান ডিজাইন ও নির্মাণ করার ক্ষেত্রে আরব আমিরাতের অভিজ্ঞতা একেবারেই নেই।সংযুক্ত আরব আমিরাতের মঙ্গল অভিযান সফল হলে তাদের নাম যুক্ত হবে বিশ্বের হাতেগোনা কয়েকটি দেশের তালিকায়। তারা এমন একটি কাজে হাত দিয়েছে যা এর আগে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউরোপ ও ভারত করতে পেরেছে।

মঙ্গলগ্রহে একসময় পানি ছিল বলে ধারণা করা হয়। সে গ্রহ কীভাবে আজকের ধূলিধূসর নিষ্প্রাণ লাল গ্রহে পরিণত হলো, সেটি জানার জন্য বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান চালানো হবে হোপ মিশনের লক্ষ্য। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের তত্ত্বাবধানে আরব আমিরাতের বিজ্ঞানীরা সাড়ে ছয় বছর ধরে এটি নিয়ে কাজ করছেন। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, মঙ্গল থেকে কীভাবে বাতাস কমে গেলো কিংবা পানির বিষয়টি বোঝার ক্ষেত্রে এ অভিযান সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।

অন্যদিকে, ‘হোপ মিশন’ পরিণত হবে অনুপ্রেরণার বাহন হিসেবে, যা আরব আমিরাতসহ পুরো আরব অঞ্চলের তরুণদের বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করবে। দেশটির সরকার বলছে, এ মহাকাশযাত্রা এমন প্রকল্পের অংশ, যা দেশটিকে তেল-গ্যাস নির্ভর অর্থনীতি থেকে জ্ঞানভিত্তিক সমাজের দিকে নিয়ে যাবে।

মঙ্গল অভিযানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাম শুনে যেমন সবাই যেমন অবাক, তার চেয়েও অবাক করা ঘটনা একটি আরব দেশে একজন নারীর এ রকম একটি মহাকাশ অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়ার ঘটনা।

সারাহ আল-আমিরি ‘হোপ মিশনের’ বৈজ্ঞানিক দলের প্রধান। একই সঙ্গে তিনি দেশটির অ্যাডভান্সড সায়েন্সবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী। এই নবীন বিজ্ঞানী এরই মধ্যে আরব বিশ্বের নারীদের জন্য এক বড় অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন। ‌‘হোপ মিশন’ পৃথিবী ছেড়ে যখন রওনা হয়েছে মঙ্গল অভিমুখে, তখন একই সঙ্গে সবার নজর সারাহ আল-আমিরির দিকেও।