মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প করোনাভাইরাসে আক্রান্ত । শুক্রবার টুইটারে এই কথা জানান তিনি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় তাঁকে ইতিমধ্যে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হবার ২৪ ঘণ্টা পার হবার আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সামরিক হাসপাতালে নেয়া হয়। শুক্রবার বিকেলে হোয়াইট হাউস থেকে নিকটবর্তী সামরিক হাসপাতালে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তিনি কয়েকদিন থাকবেন । ওয়াইট হাউস কর্মকর্তারা বলছেন, সতর্কতা হিসেবেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব কাইলি ম্যাকএনানি এক বিবৃতিতে বলেন, “প্রচুর সতর্কতার কারণে এবং তার চিকিৎসক এবং চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের সুপারিশে প্রেসিডেন্ট আগামী কয়েকদিন হাসপাতাল থেকেই কাজ করবেন।”ওয়াইট হাউস কর্মকর্তারা বলছেন প্রেসিডেন্টকে সতর্কতা হিসেবে ওষুধ দেয়ার পর তিনি ‘ক্লান্ত কিন্তু ভাল ছিলেন। আমেরিকায় গণমাধ্যম জানাচ্ছে, ট্রাম্পের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে হাল্কা জ্বর।
হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের মতে, হাসপাতালে ভর্তি ৭৪ বছর বয়স্ক প্রেসিডেন্ট এর তরফ থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়নি। প্রেস সেক্রেটারির মতে, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভালো মুডে আছেন। তাঁর মৃদু উপসর্গ রয়েছে এবং তিনি কাজ করছেন।”
ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা হোপ হিকসের কোভিড ধরা পড়ার পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট কোভিড পরীক্ষা করান। সেখানেই ধরা পড়ল করোনা পজিটিভ। জানা গিয়েছে মিনেসোটা থেকে একটি সভা করে ফেরার সময় অসুস্থ বোধ করেন হিকস। তাঁকে প্লেনেই আইসোলেট করা হয়। পরে তাঁর শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। চলতি সপ্তাহে বেশ কয়েকবার ট্রাম্পের সঙ্গে যাতায়াত করেছেন হোপ হিকস। ২০১৬ সালের নির্বাচনে তিনি ট্রাম্পের মুখপাত্রের কাজ করেছিলেন। এরপর তিনি হোয়াইট হাউজে কম্যুনিকেশনস ডিরক্টেরের পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। এবারের ভোটের আগে ফের তিনি উপদেষ্টা রূপে ট্রাম্প টিমের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, করোনা কেস ও মৃত্যুর সংখ্যা বিশ্বের মধ্যে প্রথম স্থানে আছে আমেরিকা। ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৭০ লক্ষ মার্কিনবাসী, মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ মানুষের। প্রায় সব সমীক্ষাই বলছে, নভেম্বরের নির্বাচনে হারের সম্ভাবনা প্রবল ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তাঁর প্রতিপক্ষ জো বাইডেন বারবার বলেছেন যে ট্রাম্প করোনাকে নিয়ে হেলাফেলা করেছেন। মাস্ক পরেননি অনেক দিন, বড় বড় সভা করেছেন। এবার কিন্তু কোভিডের জেরে তাঁকে মানতেই হবে সব বিধিনিষেধ।
মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট অসুস্থতার কারণে কাজ না করতে পারলে তিনি তাঁর দায়িত্ব ভাইস-প্রেসিডেন্টের কাছে ন্যস্ত করতে পারেন। অর্থাৎ, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স সাময়িক ভাবে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হবেন।