অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্ট বিধিসম্মত নয়
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার জন্য বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (BoT) গঠন করে সোসাইটিজ অ্যাক্ট অনুযায়ী ট্রাস্টের নিবন্ধন নেয়া বাধ্যতামূলক।শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (UGC) তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে অনুমোদিত ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নিবন্ধন রয়েছে ৫০/৬০টির। সে হিসেবে প্রায় অর্ধেক বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টেরই কার্যক্রম পরিচালনার আইনগত বৈধতা নেই।
দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নীতিনির্ধারণের সর্বোচ্চ পর্ষদ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (BoT)। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক কাঠামো থেকে শুরু করে সংবিধি, বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা ও বাজেটসহ গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্তেরই চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় এ পর্ষদ। নিবন্ধনবিহীন এসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টির কার্যক্রমের আইনগত বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী দিদারুস সালাম দখিনাকে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন,২০১০-এ বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের ক্ষেত্রে যে শর্ত দেয়া আছে BoT অন্যতম এবং প্রথম শর্ত । তাই নিবন্ধন ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করলে আইনগত বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।
ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী , বিওটির অধীনেই একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দেয়া হয়। আরজেএসসির নিবন্ধন না থাকা বিওটির কোনো প্রস্তাব বা আবেদন আমলে না নেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউজিসি। সাধারণত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য কোষাধ্যক্ষ ও অডিটর নিয়োগের প্যানেল প্রস্তাবসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আবেদন আসে ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে। বর্তমানে এসব আবেদনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিওটির পক্ষ থেকে আরজেএসসির নিবন্ধনের সনদও চাওয়া হচ্ছে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড সনদ জমা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে, তাদের কোনো প্রস্তাবই আমলে নেয়া হচ্ছে না।
আরজেএসসির নিবন্ধন না থাকা বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হলো সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯৬ সাল থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করলেও এখন পর্যন্ত আরজেএসসির নিবন্ধন নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ড।
২০০৩ সালে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অনুমোদন হয়। এখনো আরজেএসসি নিবন্ধন পায়নি ঢাকার এই ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডও।
২০০৫ সালে চট্টগ্রামের ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি ট্রাস্টি বোর্ডের নিবন্ধনের জন্য আরজেএসসিতে আবেদন করেছেন যা এখনো প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে আইনে নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত সদস্য নিয়ে গঠন করার কারণেও বৈধতা হারিয়েছে অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে রয়েছে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি । আইন অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিওটির সর্বোচ্চ সদস্য হতে হবে ২১ জন। যদিও ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের বিওটির সদস্য সংখ্যা ৩০-এর বেশি। এছাড়া পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিওটিতে বর্তমানে সদস্য রয়েছেন ২৫ জন।